চাঁদা তুলে ১১ জন মহিলা কেটেছিলেন ২৫০ টাকার টিকিট, জিতলেন ১০ কোটি

কোনভাবে পুরসভার কাজ করে চলত তাঁদের সংসার। বাড়িতে বাড়িতে আবর্জনা সংগ্রহ করাই ছিল তাঁদের কাজ। অভাবের সংসারে তাঁদের মানিব্যাগে ২৫ টাকাও থাকতো না। তাই ভাগ্য পরীক্ষা করতে একসঙ্গেই লটারি কেটেছিলেন পুরসভার ১১ জন মহিলা কর্মী। তাঁরা একসঙ্গে আড়াইশো টাকা জোগাড় করে সেই টাকার টিকিট কাটেন। আর রাতারাতি তাঁদের ভাগ্য বদলে দিল সেই লটারি। ১০ কোটি টাকার লটারি জিতলেন ওই মহিলারা। কেরলের পরপ্পানংগাদি পুরসভার হরিৎ কর্ম সেনার ১১ জন মহিলা এখন কোটিপতি! এত টাকার লটারি জেতায় স্বাভাবিকভাবেই আনন্দে আত্মহারা ওই মহিলা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। 

আরও পড়ুন: লটারিতে প্রাইজ জেতার নামে সিভিক ভলান্টিয়ারের কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা প্রতারণা

পুরসভায় হরিৎ কর্ম সেনার ওই ১১ জন মহিলা একসঙ্গে লটারির টিকিট কেটেছেন। এক সপ্তাহ আগে তাঁরা ২৫০ টাকার টিকিট কিনতে গিয়েছিলেন। প্রত্যেকে ২৫ টাকা করে দিয়েছেন। একজনের কাছে সেই টাকাও ছিল না। কোনওভাবে অন্যজনের কাছ থেকে ধার করে টাকা ধার করে জোগাড় করেছিলেন তিনি। লটারি কাটার পরেও অধীর আগ্রহে লাকি ড্রয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন মহিলারা। এর আগেও তাঁরা লটারি কেটেছেন। তখন তাঁরা ছোটখাটো পুরস্কার জিতেছেন। তবে তাঁরা যে কোটি পতি হবেন তা কল্পনাও করতে পারেননি। একজন মহিলা জানান, যখন টিনকজন্তে পারেন যে অন্য একজন কোটি টাকার পুরস্কার জিতেছেন তখন তিনি বেশ হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। পরে জানতে পারেন যে তাঁরাই জ্যাকপট জিতেছেন। কেরালার টিকিট বিভাগ এই ১১ জন মহিলার দলকে ১০ কোটি টাকার লটারির বিজয়ী হিসাবে ঘোষণা করেছে। রাধা নামে এক মহিলা জানান, ‘আগেও তাঁরা টিকিট কেটেছি। কিন্তু এত বড় অঙ্কের জয় এই প্রথম। এত বড় জ্যাকপট কখনোই আশা করিনি।’ অন্যের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে টিকিট কেটে যে তাঁরা জ্যাকপট পাবেন তা অন্যরাও কল্পনা করেননি। 

হরিৎ কর্ম সেনার কাজ হল বাড়িঘর ও অন্যান্য জায়গা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করা। বর্জ্য সংগ্রহ করে রিসাইক্লিংয়ের জন্য পাঠিয়ে থাকেন তাঁরা। হরিৎ কর্ম সেনার সভাপতি শিজা বলেন, ‘এই মহিলারা খুব পরিশ্রমী। যোগ্যতমদের ভাগ্য উজ্জ্বল হয়েছে। তাঁরাই তাঁদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এটা একটা বড় দায়িত্ব। পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, কন্যার বিবাহের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাঁরা এই টাকা ব্যবহার করতে পারবেন।  এটা খুবই ভালো বিষয়।’ জয়ীদের মধ্যে এক মহিলা বলেন, ‘আমাদের সকলের অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন কাটে। এই অর্থে আমাদের সমস্যাগুলি কিছুটা হলেও মিটবে।’