শান্তি সমাবেশে বক্তব্য দিলেন সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার পূর্ণিমা রানী শীল

আওয়ামী লীগের সহযোগী সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন ২০০১ সালে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী (২০০১ সালে তার বয়স ছিল ১৪ বছর) পূর্ণিমা রানী শীল। এসময় তিনি বিএনপিকে ‘স্কাবিস’ (চর্মজাতীয় রোগ) আখ্যায়িত করে তাদের ঝেটিয়ে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।

পুর্ণিমা রানী শীল তার বক্তব্যে বলেন, ‘ধাক্কা খাইতে খাইতে নৌকা অনেক শিক্ষা পেয়েছে। এখন আমাদের এই শিক্ষা প্রয়োগ করার সময় এসেছে। আমি আজ ভাই-বোনদের কাছে অনুরোধ নিয়ে এসেছি। দীর্ঘ ১৫ বছর বাংলাদেশের নারী সমাজ খুব স্বাধীন ও সুন্দরভাবে পথ চলতে পারছে। ২০০১ সালের মতো হাওয়া ভবন থেকে আদেশ হয় না। রাস্তাঘাটে মেরে খুন করে, ধর্ষণ করে নির্যাতন করে, বাড়ি ছাড়া করে, গ্রাম ছাড়া করে ডিস্ট্রিক ছাড়া করে, বিভাগ ছাড়া করে এই পূর্ণিমাকে তাড়িয়েছে; সেই বিএনপি। ভ্রু কাটা কমলা সুন্দরী, যাকে দেখলে শুধু মনে হয় আমার অ্যালার্জিটা বেড়ে গেছে। এই বিএনপি স্কাবিসের মতো; যা খুবই কষ্টদায়ক। আমার মা কাঁচা চুলে বিধবা হয়েছেন। আমার বাবাকে আমি হারিয়েছি। আমার বাল্যজীবন আমি হারিয়েছি। আমার হাত থেকে খাতা-কলম হাতে বাল্যশিশুর জীবনটা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কই তখন তো তারা আমার পাশে এসে দাঁড়ায়নি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান আজ কোথায়? কেমন করে বলেন মানবাধিকারের কথা? আপনার কী লজ্জা হয় না? মেকআপ লিপিস্টিক মারা নারীদের নিয়ে ফুর্তি করা, হাওয়া ভবনে থাকা; এই ধরনের পুরুষের মুখে কখনও মানবতার কথা মানায় না। আপনি একটা চর্ম রোগ। তারেক রহমান বাংলাদেশের জন্য একটি চর্মরোগ। এই চর্মরোগকে ঝাটা আর জুতা পেটা করে বাংলাদেশের মাটি থেকে তাড়াতে হবে। বিদেশের মাটিতে বসে হাওয়া লাগিয়ে ডায়ালগ দেওয়া যায় না।’

পূর্ণিমা বলেন, ‘সবার কাছে আমি আকুতি-মিনতি করতে এসেছি। আমি ঘরে ঘরে পূর্ণিমা দেখতে চাই না। আপনারা দেখেছেন, আমার মা এখন কেমন আছে, আমি কেমন আছি। আপনারা অতীত দেখেননি। অতীতে হিন্দু পরিবার ধানের শীষে ভোট দিলেও বলতো নৌকা, নৌকায় ভোট দিলেও বলতো নৌকা। এই ছিল হিন্দু পরিবারের অপরাধ। সেই অপরাধ ঢাকতে গিয়ে আমরা ২১ হাজার শরণার্থীকে দিনের পর দিন রক্ত দিয়ে, ইজ্জত দিয়ে, মা-বাবা ও ভাইবোনের প্রাণ দিয়ে শোধরাতে হয়েছে। এই জীবন আর আমরা চাই না। স্কাবিস যেন আমাদের শরীরে না লাগতে পারে এটাই আজ সবার কাছে অনুরোধ।’

‘আমি প্রথমবারের মতো আপনাদের কাছে এসেছি। ভ্রু কাটা কমলা সুন্দরী খালেদা জিয়া, ওই বিএনপি কর্মীরা; কী ধরনের নোংরা খেলা খেলতে পারে তা আপনারা ভালো করে বুঝতে পারছেন। তাই আপনারা এদের না বলুন’, বলেন এই নারী।

বর্তমান নারীরা শান্তিতে বসবাস করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন কোনও মা-বোন রাস্তাঘাটে ইভটিজিংয়ের শিকার হন না। কোনও মেয়ের লাশ দেখা যায় না। শোনা যায় না ধর্ষণ হয়েছে। সবার কাছে অনুরোধ এই স্কাবিসকে দূর করুন। তাদের ঝাড়ু মেরে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিতে হবে। জয়বাংলা জাগবে, নৌকা মার্কা থাকবে। আমি যে অন্যায়ের শিকার হয়েছি। আগুন সন্ত্রাস শয়তানদের আর জায়গা দেবেন না।’