বিএসএফের হাতে মারা গেল পাচারকারী, সীমান্তে উত্তেজনা

বিএসএফের সঙ্গে পাচারকারীদের গুলি বোমা সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল সীমান্ত। এই ঘটনায় দুপক্ষের সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে এক গরু পাচারকারীর। মৃতের নাম মমিনুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গী থানার সরকারপাড়া এলাকায় ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে। মমিনুল ইসলামের বাড়ি জলঙ্গী থানার জিন্নাত পাড়া এলাকায়। এদিন দুপক্ষের সংঘর্ষ কার্যত রণক্ষেত্র চেহারা নেয় সীমানা।

আরও পড়ুন: বিএসএফের গুলিতে মৃত যুবকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বিজেপি আক্রমণ উদয়নের

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে ওই এলাকায় গুলি চালানোর পাশাপাশি বোমাবাজির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। সকাল হতেই তাঁরা জানতে পারেন বিএসএফের সঙ্গে পাচারকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েকজন গরু পাচারকারী কাঁটাতার টপকে বাংলাদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিল। সেই সময় তা বিএসএফের জওয়ানদের চোখে পড়ে। তারা পাচারকারীদের বাধা দিলে তারা বিএসএফ জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর পাশাপাশি বোমাবাজি করে। তখন পালটা গুলি চালায় বিএসএফ। যদিও বিএসএফের তরফে যা হয়, প্রথমে রাবার গুলি চালিয়ে পাচারকারীদের আটকানোর চেষ্টা করে তারা। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় বিএসএফ। জওয়ানদের ছোড়া গুলিতে মৃত হয় মমিনুলের। পরে তাঁকে সকালে  সাধিখারদিয়ার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। 

মমিনুল গরু পাচারকারীদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেকথা স্বীকার করেছে তাঁর পরিবার। তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ভিন্ন রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন মমিনুল। তবে ইদে বাড়ি এসে স্থানীয় এক পাচারকারী সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। ৫০০ টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশে গরু পৌঁছে দেওয়ার কাজ পান মমিনুল। এরপরেই এই কাজ শুরু করেন। মমিনুল গত দুদিন আগে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। কিন্তু তারপরে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। তাঁর স্ত্রী জানান, গরু পাচারে রাখালের কাজ করার জন্য তাঁর স্বামীকে নিয়ে গিয়েছিল পাচারকারীরা। সকালে পুলিশের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্বামী বিএসএফের গুলিতে মারা গিয়েছেন।

এদিকে, ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোমবার সকালে ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে ডোমকল এসডিপিও সহ জলঙ্গী থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পরিবারের একমাত্র রোজগেরের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে সদস্যদের মধ্যে। প্রসঙ্গত, বিএসএফের গুলিতে প্রায় পাচারকারীদের মৃত্যু হয়। সে ক্ষেত্রে বারবার বিএসএফকে কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল।