গতরাত থেকেই চোখ মেলে তাকাতে শুরু করেছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে আজ সকালেও ভেন্টিলেশনেই রাখা হয়েছে তাঁকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাইল্যাটারাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় এখনও সঙ্কটজনক অবস্থাতেই আছেন তিনি। তবে সংকটজনকে হলেও স্থিতিশীল আছেন তিনি। এদিকে জ্বরটা কমেছে বলে জানাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে আজ সকালে বুদ্ধবাবুর ফুসফুসের সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে পরবর্দী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবেন বোর্ডের চিকিৎসকরা। তবে এখন রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা খুব বেশি ওঠা-নামা করছে না বলেই জানিয়েছেন উডল্যান্ডের চিকিৎসকরা। এদিকে ইনসুলিন দেওয়ার পর কমেছে তাঁর সুগার লেভেল।
হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ দিচ্ছে। তাই জ্বর কমেছে বুদ্ধবাবুর। জানা গিয়েছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শরীরে ক্লেবশিয়েলা নামক একটি ব্যাক্টেরিয়া পাওয়া গিয়েছে। এই ব্যাক্টিরিয়াটা নাকি ‘মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স’। অর্থাৎ, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে। পাশাপাশি কোনও ওষুধের প্রতিক্রিয়াও হতে দেয় না শরীরে। এই আবহে বুদ্ধবাবুকে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছিল, সেটি নাকি বদল করা হয়েছে। এই নতুন হাই ডোজের অ্যান্টিবায়োটিকেই কাজ দিয়েছে। এদিকে জানা গিয়েছে, ফুসফুসে সংক্রমণ থাকলেও তাঁর হৃদপিণ্ড ভালোভাবে কাজ করছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিনি সচেতন রয়েছেন। ডাকলে বুদ্ধবাবু সাড়া দিচ্ছেন। পরিজনদের চিনতেও পারছেন। হাসপাতালের তরফে জানানো হচ্ছে, ‘হিমোডাইনামিকালি স্টেবল’ রয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গত, বুধবার থেকে জ্বর আসে বুদ্ধবাবুর। শুক্রবার থেকে শুরু হয় মারাত্মক শ্বাসকষ্ট। এরপর শনিবার দুপুরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তাঁকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। সন্ধ্যায় কিছুটা স্থিতিশীল হলেও রাতে ফের সঙ্কটজনক হয় তাঁর শারীরিক অবস্থা। তাঁর ‘টাইপ ২ রেসপিরেটরি ফেলিয়োর’ হয়েছে। অর্থাৎ রক্তে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেশি আছে। তাঁকে প্রাথমিকভাবে বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু যতটা শারীরিক অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করেছিলেন চিকিৎসকরা, ততটা উন্নতি না হওয়ায় শনিবার রাতেই বুদ্ধদেববাবুকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, নয়জন চিকিৎসকের একটি বিশেষজ্ঞ দল তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন। এমনিতেও দীর্ঘদিন ধরে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে ভুগছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এর জেরে এর আগেও একাধিকবার হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন তিনি।