পঞ্চায়েত ভোটে একাধিক বিডিওর বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগে প্রথম থেকেই সরব হয়েছিল বিরোধীরা। তা কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলাও হয়। সেই সংক্রান্ত একটি মামলায় ইতিমধ্যেই এক মহকুমা শাসককে সাসপেন্ড করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এনিয়ে আরও একটি মামলায় বিডিওদের পাশাপাশি মহকুমা শাসকদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবারে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেই মামলায় বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘মহকুমা শাসকের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে।’
আরও পড়ুন: গণনায় কারচুপির অভিযোগে BDO-কে ‘শারীরিক নিগ্রহ’, বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে FIR
বিডিও’র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের দুর্গাপুরের উখরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী রুকসানা খাতুন। তাঁর অভিযোগ ছিল, ওই পঞ্চায়েতের একটি আসন অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত থাকলেও সেখানে সাধারণ শ্রেণির প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ওই আসনের তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন অনিল বার্নোয়াল। তিনি সাধারণ শ্রেণি তালিকাভুক্ত। রুকসানার অভিযোগ, তিনি এ নিয়ে বিডিও এবং এসডিও, জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, সুরাহা না মেলায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই মামলায় মহাকুমা শাসকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তিনি মহকুমা শাসকের ভূমিকা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজ্য সরকারকে হলফনামা জমা দিতে বলেছেন।
মামলাকারীর অভিযোগ, তৃণমূল প্রার্থী অনগ্রসর শ্রেণি থেকে ছিলেন না। তারপরে স্ক্রুটিনির পর তাঁর নামের পাশে ওবিসি লেখা ছিল। অনিলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি পূর্ব বর্ধমানের দুর্গাপুর মহকুমার বাসিন্দা হলেও তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল মহকুমা প্রশাসনের দেওয়া। অথচ এই ওবিসি সার্টিফিকেট নিজের জেলা থেকেই পাওয়ার কথা। সেই ক্ষেত্রে অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও তিনি কীভাবে পশ্চিম বর্ধমান থেকে ওবিসি সার্টিফিকেট পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। তার উত্তর চেয়ে পাঠিয়েছেন বিচারপতি। উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হওয়ার এক মাস কেটে গেলেও এখনও বহু মামলা চলছে আদালতে। অভিযোগের ধরনও ভিন্ন ভিন্ন। একাধিক মামলায় গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন বিডিও-কে তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এছাড়াও, পঞ্চায়েত ভোটে কারচুপির অভিযোগে, ইতিমধ্যেই বিডিও-দের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে বিজেপি। আগামী ১৮ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।