একসঙ্গে বাবা–ছেলের মৃত্যু বনগাঁয়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকের ছায়া

আজ, বুধবার সকালে তখন বৃষ্টি পড়ছিল। তারপর তা থেমে যেতেই ফুল তুলতে যান এক ব্যক্তি। আর সেই পথেই তিনি বিদ্যুৎস্পষ্ট হন। তখন তাঁর আর্ত চিৎকারে বেরিয়ে আসে ছেলে। আর বাবারে বাঁচাতে যান। তখন ছেলেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তারপর তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এভাবেই একসঙ্গে মৃত্যু হল বাবা–ছেলের। এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন বনগাঁর বাগদার সিন্দ্রানী এলাকার বাসিন্দারা। গোটা পরিবার এখন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, রোজ সকালেই ফুল তুলতে যেতেন বাগদা এলাকার বাসিন্দা সমীরচন্দ্র দাস। আজও সেই কাজটি করতেই বেরিয়ে ছিলেন। বাড়ির বাইরে রাস্তার ধারে ফুল তুলতে গিয়ে একটি ডাল তাঁর সামনে পড়ে থাকতে দেখেন। সেটি তিনি হাত দিয়ে সরাতে যান। আর তখনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়েন। চিৎকার করে ওঠেন সমীরবাবু। তখন তাঁকে বাঁচাতে যান ছেলে বিকাশ দাস। তিনিও তখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়েন। আর মারা যান। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বাগদা ব্লকের সিন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতের মাগুরকোনা গ্রামে। এমন ঘটনার পর দু’‌জনকেই উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবা ও ছেলের মৃত্যুতে এখন গোটা গ্রামে এবং পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃতদের নাম সমীরচন্দ্র দাস (৬২) এবং বিকাশ দাস (৪২)। সম্পর্কে তাঁরা বাবা–ছেলে। বনগাঁর বাগদার সিন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতের মাগুরকোনা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তাঁরা। ছেলে বিকাশের বাজারে বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের দোকান আছে। সেখানেই তিনি কাজ করতেন। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, প্রত্যেকদিন সকালেই ফুল তুলতে যেতেন সমীরবাবু। আজও তাই গিয়েছিলেন। বৃষ্টি থামতেই বেরিয়ে পড়ে ছিলেন। গতকাল রাতেও নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছিল এখানে। রাস্তার পাশে একটি ছোট গাছের ডাল পড়ে থাকায় সেটি সরাতে যান তিনি। আর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান সমীরবাবু ও তাঁর ছেলে বিকাশ।

আরও পড়ুন:‌ কলকাতায় এলেন সিবিআই ডিরেক্টর, অফিসারদের নিয়ে হঠাৎ কেন রুদ্ধদ্বার বৈঠক?

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ এদিন সমীরবাবু যখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তখন মারাত্মক জোরে চিৎকার করে ওঠেন। তাতেই বাড়ি থেকে তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসেন ছেলে বিকাশ। তিনি ভাবার সময় পাননি বাবা কেন অচৈতন্য হয়ে পড়েছে। তাই তড়িঘড়ি বাবাকে বাঁচাতে যান তিনি। আর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বিকাশ দাস। বাবাকে ধরতেই বিকাশবাবুও বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা তাঁদেরকে উদ্ধার করে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এখন শোকের ছায়া এলাকায়।