‘‌আমি অনুতপ্ত,‌ টোলকর্মীকে ‘‌গলা ধাক্কা দিয়ে আক্রমণ করে সুর নরম করলেন সাংসদ

রাজ্য–রাজনীতিতে আবার এক কাণ্ড ঘটে গেল। গাড়ি আটকে ছিলেন টোলকর্মী। আর তার জেরে পালসিট টোল প্লাজায় ওই কর্মীকে ‘‌গলাধাক্কা’‌ দিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার মঙ্গলকোটে যাচ্ছিলেন সুনীল মণ্ডল। এদিন সাংসদ ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে পালসিট টোলে পৌঁছন। সেখানে ডিউটিরত টোলকর্মী উজ্জ্বল সিং সর্দার সাংসদের গাড়ি আটকান। তখনই গাড়ি থেকে নেমে ওই টোলকর্মীকে গলা ধাক্কা দেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল বলে অভিযোগ। টোল প্লাজার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে তা ধরা পড়েছে। (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল) আর তাতেই সরগরম রাজ্য–রাজনীতি।

এদিকে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সাংসদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় জোর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও পাল্টা সাংসদের দাবি, টোলকর্মী মদ্যপ ছিলেন। আবার এই ঘটনায় তিনি ‘অনুতপ্ত’ বলে সংবাদমাধ্যমে সুর নরম করেছেন। এই ঘটনা নিয়ে যখন শোরগোল চলছে তখন জেলা পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন। তিনি বলেন, ‘‌আমাদের কাছে ভিডিয়ো এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’‌ এই ঘটনা নিয়ে উত্তোরত্তর ক্ষোভ বাড়তে থাকায় সাংসদ বুঝতে পারেন বিষয়টি হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তৃণমূল কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। কাউকে পাশে না পেয়ে তখন সুর নরম করেন সাংসদ।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল?‌ অন্যদিকে টোল প্লাজা থেকে সাংসদের গাড়িটি বেরোতে গেলে ফাইবারের স্ট্যান্ড রেখে দেন উজ্জ্বল সিং সর্দার। তখন সাংসদের গাড়িচালক সেই স্ট্যান্ডে ধাক্কা মেরে এগিয়ে যায়। এই আবহে গাড়িতে থাকা বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সাংসদ নেমে আসেন। আর তেড়ে মারতে যান উজ্জ্বলকে। তাঁকে গলা ধাক্কা দিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ। তাতে চমকে যান উজ্জ্বল। সাংসদের নিরাপত্তারক্ষী এবং চালক গাড়ি থেকে নেমে শাসাতে থাকেন। উজ্জ্বলের সহকর্মীরা তখন পরিস্থিতি শান্ত করেন। যদিও সুনীল মণ্ডলের পাল্টা দাবি, ‘‌আমার নিরাপত্তারক্ষী ওকে কয়েকবার বুঝিয়েছে। আমি তো ১০ বছর ধরে এখান দিয়ে যাতায়াত করি। আগে কখনও ঘটেনি। টোল কর্মী মদ্যপ ছিলেন। লেখাপড়াও জানেন না। আমি ওকে বললামও আমাকে চিনতে পারছিস না। আমি ওকে একটু ধাক্কা দিয়েছি। মারধর করিনি। তার জন্য আমি দুঃখিত। আপনাদের মাধ্যমে আমি ওর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিচ্ছি।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘‌কেন্দ্রীয় অত্যাচারের প্রতিবাদে প্রতি ব্লকে ধরনা হবে’‌, নবান্ন থেকে তারিখ ঘোষণা মমতার

আর কে, কি বলছেন?‌ এই ঘটনাকে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থন করেনি। জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেন, ‘‌আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। এভাবে মারধর করে বিচারও করতে পারেন না। উনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারতেন। এসব বরদাস্ত করা হবে না।’‌ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সাংসদ সুনীল মণ্ডল সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‌আমার গাড়ির সামনে মেম্বার অফ পার্লামেন্ট লেখা আছে। একটা বোর্ডও আছে। আমি নয়াদিল্লি থেকে ফিরছিলাম। আমি স্বীকার করছি আমার একটু রাগ হয়েছিল। আমি অনুতপ্ত, দুঃখিত।’‌ আর টোলকর্মী উজ্জ্বল সিং সর্দারের কথায়, ‘‌আমি শুধু আমার ডিউটি করেছি। এভাবে কেন উনি মারবেন?’‌