‘‌আমি অসহায়’‌, এজলাসে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি

এবার ভরা এজলাসে বসে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এবার কলকাতা হাইকোর্টের কর্মচারী সংখ্যা কম থাকায় বহু মামলার অগ্রগতি হচ্ছে না। তার জেরে সাধারণ মানুষ যাঁরা মামলা করেছেন তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে এসে ফিরে যাচ্ছেন। দিনের পর দিন এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার এই নিয়ে ভরা এজলাসে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এমনকী এই বিষয়ে রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

এদিকে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে রোজই নানা মামলা জমা পড়ে। আবার রোজই কোনও না কোনও মামলা তাঁকে শুনতে হয়। সুতরাং মানুষের রোজকার মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চান তিনি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কলকাতা হাইকোর্টে কর্মী সংখ্যা কম থাকায় তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। দিনের পর দিন কর্মী নেই শুনতে হচ্ছে বিচারপতিকে। এবার তাঁর ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটেছে। তাই তিনি এদিন অফিসারদের তলব পর্যন্ত করেন। সেখানেই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘‌লোক দেওয়া না হলে হাইকোর্ট এবার উঠে যাবে। আমি অসহায়। এভাবে চলতে পারে না। লোকের ব্যবস্থা করুন। এটা বেশিদিন চলতে পারে না। পর্যাপ্ত কর্মী দেওয়া না হলে এটা হাইকোর্টের বিড়ম্বনা ছাড়া আর কিছুই না।’‌

তারপর ঠিক কী ঘটেছে?‌ বিচারপতির এমন মেজাজ দেখে তখন সবাই একে অন্যের মুখ দেখছেন। অন্যান্য আইনজীবীরাও তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বাড়তি কথা কেউ বলছেন না। যেন পিন পড়ার নীরবতা তৈরি হয়েছে এজলাসে। এখন কলকাতা হাইকোর্টে কোনও ঘটনা ঘটলেই সেটা বড় আকার নিচ্ছে। সেখানে আদালতে কর্মী অভাব বড় আকার ধারণ করল। ভরা এজলাসে বিচারপতির ভর্ৎসনায় তখন তটস্থ হয়ে পড়েন সকলে। কলকাতা হাইকোর্টে নানা কাজের জন্য প্রচুর কর্মচারীর প্রয়োজন হয়। আর তা না পেয়েই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি।

আরও পড়ুন:‌ পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু খুদে স্কুল পড়ুয়ার, বেহালায় পুলিশের ভ্যান জ্বালিয়ে দিল স্থানীয়রা

আর কী বলেছেন বিচারপতি?‌ এছাড়া বিচারপতির কানে পৌঁছয় কলকাতা হাইকোর্টে ঘুরে ঘুরে জুতোর শুকতলা খোয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু তাঁরা বিচার পাচ্ছেন না। যেহেতু লোক সংখ্যা কম সেহেতু মামলার অগ্রগতিও কম। এইসব শুনেই ক্ষোভ, অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আর এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‌আমার কিছু করার নেই। আমাকে আগেই উঠে যেতে হবে। কারণ লোক না পেলে আদালত চালাব কি করে! তারপরেও যে লোক নোট নিচ্ছেন, তিনি দিনের পর দিন ভুল লিখছেন। এই সমস্যা এবার কোর্টের ঘরে আসবে। এটা কিছুতেই চলতে পারে না।’‌