আল কায়েদার সঙ্গে যোগের সন্দেহে গুজরাটে গ্রেফতার ৩ বাঙালি স্বর্ণকার, মিলল নথি

আল কায়েদা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে বাংলার ৩ স্বর্ণ কারিগরকে গ্রেফতার করল গুজরাটের অ্যান্টি টেরোরিজম স্কোয়াড (এটিএস)। গত সোমবার তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গুজরাটের রাজকোটে তারা স্বর্ণ কারিগর হিসেবে কাজ করছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এটিএস প্রথমে রাজকোট থেকে তাদের আটক করে। এরপরে তাদের গ্রেফতার করে। তাদের স্থানীয় আদালতে তোলা হলে তাদের ১৪ দিন এটিএসের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ধৃতদের নাম হল আবদুল সুকুর আলি, আমান মালিক এবং সইফ নওয়াজ। 

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে, বাংলাদেশে শক্তি বাড়াতে চাইছে আল কায়দা, দোসর হয়েছে তালিবান: UN Report

এটিএস জানিয়েছে, সুকুর ও নওয়াজ বর্ধমান জেলার বাসিন্দা এবং সইফ পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বাসিন্দা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের মোবাইল থেকে মৌলবাদী সাহিত্য সহ দেশীয় তৈরি আধা স্বয়ংক্রিয় পিস্তল, ১০টি কার্তুজ এবং পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।এটিএসের পুলিশ সুপার (এসপি) ওম প্রকাশ জাট জানিয়েছেন, তিনজনের আল কায়েদার সঙ্গে যোগ ছিল। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আমান টেলিগ্রাম সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের মাধ্যমে আল কায়েদার আবু তালহা এবং ফুরসানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এবং আল কায়েদার তানজিমে (সম্প্রদায়) যোগদান করেছিল। এরপর আমান টেলিগ্রামের মাধ্যমে মুজামিল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেই তাকে আধা স্বয়ংক্রিয় পিস্তল জোগাড় করতে সাহায্য করেছিল এবং তাকে জিহাদে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছিল। পরে আমানের সূত্র ধরেই তার পরিচিত আবদুল সুকুর আলি এবং সইফ নওয়াজ ওই জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয়। যদিও ওই ৩ জনকে আল কায়েদার তরফে কী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জানাতে চাননি এসপি। তিনি জানান, ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী ফরেনসিকের জন্য পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, রাজকোট হল ভারতের গহনা-উৎপাদন শিল্পের একটি প্রধান কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার কারিগর এই শিল্পে কাজ করেন। জানা গিয়েছে, আমান এক বছর ধরে রাজকোটে কাজ করছিল। অন্যদিকে, আবদুল সুকুর এবং সইফ প্রায় ৭ থেকে ৮ মাস আগে রাজকোটে গিয়েছিল। তিনি আরও জানান, ধৃতেরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার সম্পর্কে তাদের হ্যান্ডলারদের কাছ থেকে নির্দেশ পেয়েছিল। তাদের গুগল অনুসন্ধানের ইতিহাসে দেখা গিয়েছে, কীভাবে একে ৪৭ রাইফেল এবং পিস্তলের মতো স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে হয়। তিনজনের প্রাথমিক কাজ ছিল উগ্র মতাদর্শের লোকদের চিহ্নিত করা এবং তাদের আল কায়েদায় যোগ দিতে উৎসাহিত করা। অভিযুক্তদের ভারতীয় দণ্ডবিধির  ষড়যন্ত্র এবং অস্ত্র আইনের অধীনে মামলা করা হয়েছে। কারণ তাদের কাছে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার লাইসেন্স ছিল না। এছাড়া, সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের জন্যও অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং আর্থিক জরিমানা হতে পারে।