‌গঙ্গায় তলিয়ে গেল আসানসোলের দুই পড়ুয়া, কলকাতা এসে কেন ঘটল এমন বিপদ?

সেই ছোট্টবেলায় শহরে এসেছিল দুই বন্ধু। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। আর এই শহরে আসা হয়নি। কিন্তু দুই বন্ধুই আলোচনা করতেন একদিন কলকাতায় গিয়ে সময় কাটাব। এই ভাবনা যখন বাস্তবে রূপ পেল তখন দুই বন্ধুই স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করছেন। এবার হাতে ছুটি পেয়ে কলকাতায় বেড়াতে আসেন দুই পড়ুয়া বন্ধু। কিন্তু এই শহরে বেড়াতে এসে আর আসানসোলে ফেরা হল না। দুই বন্ধুই গঙ্গায় তলিয়ে গেলেন। ফলে এখন শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, কলকাতায় এসে ঘুরে শহরটাকে দেখার শখ ছিল এই দুই বন্ধুর। তাই আসানসোল থেকে পাড়ি দিয়েছিলেন তিলোত্তমা কলকাতা শহরে। কিন্তু এখানেই যে বিপদ অপেক্ষা করবে সেটা কে জানত!‌ এখানে এসে তাঁরা গঙ্গায় স্নান করতে নেমে পড়েন। আর তারপরই তলিয়ে গেলেন জলের তলায়। এই দুই ছাত্রই আসানসোলের কলেজ পড়ুয়া। আজ, শনিবার সকালে এখানে আসেন তাঁরা। আর হাওড়া স্টেশনের উলটোদিকে চাঁদমারি ঘাটে স্নান করতে নামেন। কিন্তু আর তাঁরা ওঠেননি। বিকেল পর্যন্ত দু’‌জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর,গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া দুই পড়ুয়ার নাম ইন্দ্রজিৎ মাহাতো (২১) এবং সৌমেন ধর (২০)। ইন্দ্রজিৎ আসানসোলে ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করতেন। আর বাড়ি আসানসোলের মহিশিলায়। সৌমেনের বাড়ি আসানসোলের চেলিডাঙায়। তিনি স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এরা দু’‌জনে খুব ভাল বন্ধু। তাই পরিকল্পনা করে আজ আসানসোল থেকে কলকাতায় পাড়ি দেন। আর এখানে স্নান করতে নেমে গঙ্গায় তলিয়ে যান। কারণ ভাটার টান বেশি থাকায় ভেসে গিয়েছে দুই কলেজ পড়ুয়া। আর এক পড়ুয়া এসেছিলেন। কিন্তু জলে নামেননি। তাঁর সামনেই দুই বন্ধু ভেসে গিয়েছেন বলে তিনি পুলিশকে জানান।

আরও পড়ুন:‌ এবার চরমে উঠল নবান্ন–রাজভবন বিবাদ, কোন ফাইল সই করলেন না রাজ্যপাল?

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ গঙ্গায় না নামা পড়ুয়ার নাম অরিজিৎ সরকার। দূরে দাঁড়িয়ে গোটা বিষয়টি দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি পুলিশকে জানান, তিন বন্ধু মিলে কলকাতায় বেড়াতে এসেছিলেন। চাঁদমারি ঘাটে এসে ইন্দ্রজিৎ আর সৌমেন গঙ্গায় স্নান করতে চান। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। এমনকী তাঁদেরও নামতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা তা শোনেনি। তারপর দুই বন্ধু স্নান করতে গিয়ে পাড় থেকে অনেকটা দূরে চলে যায়। তখন অরিজিৎ হাওড়া স্টেশন ট্রাফিক গার্ডকে খবর দেন। খবর দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের রিভার ট্রাফিককেও। কলকাতা পুলিশের লঞ্চ খোঁজাখুঁজি করলেও মেলেনি দেহ। এমনকী হাওড়া সিটি পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা সারা দুপুর খুঁজলেও সন্ধান পাননি।