Iran Hijab proposed rules: হিজাব না পরলে দশ বছর অবধি জেল, দুই মাসের মধ্যে নিয়ম চালু হতে পারে ইরানে

নীতি পুলিশির বজ্রআঁটুনি পেরিয়ে মাহসা আমিনিরা আওয়াজ তুলেছিলেন স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে। দিতে হয়েছিল জীবনের মূল্য। মাস কয়েক আগেও জিন-জিয়ান-জিন্দেগি স্লোগানে উত্তাল হয়েছিল যে জনপদ, সেখানেই আবার স্বৈরশাসকের হিজাব ফতোয়া জারি হল। ফের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করতে সক্রিয় হয়েছে ইরান প্রশাসন। রাস্তাঘাটে মহিলারা যাতে হিজাব পরে চলাফেরা করে, তার জন্য চলছে নজরদারিও। এবার দেশটিতে কড়া হিজাব আইন চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে সরকার।

এই বিষয়ে ইরানের সরকারি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের বিচার বিভাগ হিজাব সংক্রান্ত বিলের একটি খসড়া প্রস্তাব সরকারকে পাঠায়। এরপর সেটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় পার্লামেন্টে। আগামী রবিবার গভর্নর বোর্ডে বিলের খসড়া নিয়ে আলোচনা হবে। সূত্রের খবর আগামী দুই মাসের মধ্যে হিজাব সংক্রান্ত নতুন আইনটি চালু করতে চলেছে ইরান প্রশাসন।

কী কী রয়েছে এই নয়া হিজাব সংক্রান্ত আইনে? সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, রাস্তাঘাটে চলাফেরা সময়ে কোনও ইরানি মহিলা হিজাব না পরলে, দীর্ঘ কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে প্রস্তাবিত নয়া হিজাব আইনে। নিয়মভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে নতুন আইনে। সরকারি সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছে, প্রথমবার ড্রেস কোড লঙ্ঘনকারীর ন্যুনতম ১০ দিন থেকে ২ মাসের জেল বা ৫০ হাজার থেকে ৫ লক্ষ ইরানি রিয়াল জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। একই সাথে জেল ও জরিমানার বিধানও রয়েছে এই আইনে।

কোনও নারী যদি একাধিকবার ড্রেস কোড অমান্য করে, ৫ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত জেল এবং ৩৬০ মিলিয়ন ইরান রিয়াল জরিমানা হতে পারে। ইরানের একজন মানবাধিকার আইনজীবী এবং কানাডার কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হোসেইন রাইসি বলেন, লক্ষ লক্ষ ইরানি দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে, এই ধরনের জরিমানা তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। নারীকে পর্দার আড়ালে রাখতে প্রযুক্তিরও সাহায্য নেবে ইরান প্রশাসন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে চলবে হিজাব না-পরা মেয়েদের সন্ধান।

সরকারের এই দমনমূলক আইনের প্রতিবাদে ফের কবে গর্জে ওঠে ইরানের নারী-পুরুষরা, তা সময়ই বলবে। ইতিহাস সাক্ষী থেকেছে , বারংবার কট্টর মৌলবাদী শাসনের মুখে বন্দি হয়েছে ইরানের জনগণের স্বাধীনতা, নারীদের অধিকার। মার্কিন আগ্রাসনে কখনও বা জোর করে হিজাব খুলতে বাধ্য করা হয়েছে ইরানী মেয়েদের। কিন্তু প্রতিবারই পথেঘাটে প্রতিবাদে মুখর করে জেহাদ ঘোষণা করেছে তাঁরা। এবার নয়া হিজাব আইন ঘোষণার পর কী প্রতিক্রিয়া জানান সেদেশের মানুষ, এর জন্য অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।