স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কৈফিয়ত তলব করলেন রাজ্যপাল, পাঠালেন চিঠি

প্রথম চিঠি পাঠানো হয়েছিল স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে রিপোর্ট তলব করে। উপাচার্য সুহৃতা পালের নিয়োগ নিয়ে এই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় চিঠি পাঠানো হয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে বলে। আজ, সোমবার তৃতীয় চিঠি রাজভবন থেকে এল রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই নিয়ে তৃতীয়বার স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কেন পদ আগলে বসে রয়েছেন উপাচার্য? এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে রাজভবনের পাঠানো চিঠিতে। এমনকী চিঠি–প্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য সুহৃতা পালের কাছ থেকে কৈফিয়ত তলব করেছে রাজভবন বলে সূত্রের খবর।

এদিকে নতুন করে আবার রাজভবনের এই চিঠিতে বিপাকে পড়লেন এই স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কেন এমন ঘটনা ঘটল?‌ সম্প্রতি রাজ্যপালের কাছে কয়েকজন চিকিৎসক একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠি পেয়েই গোটা পরিকল্পনাটি ছকে ফেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই মতো নিয়োগ নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়। সেখানে কিছু গড়মিল পান রাজ্যপাল বলে খবর। আর এই চিকিৎসকরাই রাজ্যপালকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে খামতি রয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল একটি স্বশাসিত সংস্থা। তাদেরকে এই স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

অন্যদিকে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে বারবার চিঠি লিখতে হওয়ায় বিষয়টি এবার সিরিয়াস জায়গায় চলে গিয়েছে। এবার আবার একবার রাজভবন থেকে চিঠি গেল স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইমেল মারফত এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। যার জবাব দিতে বলা হয়েছে চিঠি–প্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। কেন উপাচার্য সুহৃতা পাল এখনও উপাচার্যের পদে বহাল থাকবেন?‌ এই প্রশ্নের উত্তর জানতে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব তলব করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। চিঠিতে আদালতের রায়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আদালতের রায়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা পদত্যাগ করেছেন। সেই রায় অনুযায়ী, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ করার কথা।

আরও পড়ুন:‌ মাথাভাঙায় এবার খুন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী, বোর্ড গঠনের আগে বিজেপির দিকে তির

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ ২০০৪ সালে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়। তখন উপাচার্য নিয়োগের জন্য যে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তাতে ইউজিসি’‌র মনোনীত প্রতিনিধি ছিলেন। কিন্তু পরে ২০১৩ সালে আইন সংশোধন করার পর সার্চ কমিটি থেকে ইউজিসি’‌র প্রতিনিধিকে বাদ দেওয়া হয়। তাই নতুন সার্চ কমিটির মাধ্যমেই স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন সুহৃতা পাল। রাজভবনের এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোন অধিকারে উপাচার্যের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন? উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে দুটি পৃথক মামলা হয়। কিন্তু দুটি মামলাতেই রাজ্য সরকার হেরে যায়। সেক্ষেত্রে আদালত নির্দেশ দেয় সার্চ কমিটিতে ইউজিসি’‌র প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলক। তাই পদত্যাগ করতেই হবে উপাচার্য সুহৃতা পালকে।