কালো চশমা পরে জ্ঞান দিচ্ছেন, যাকে খুশি উপাচার্য বানাচ্ছেন-রাজ্যপালকে তোপ মমতার

আজ, বিশ্ব আদিবাসী দিবস। তাই তিনি ঝাড়গ্রামে সভা করলেন। সেখানে সময় কাটান আদিবাসীদের সঙ্গে। আর এই সভা থেকেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপাল হস্তক্ষেপ করার ইস্যুকে সামনে রেখে বিজেপির দালালি করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই রাজ্যপাল বাংলায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জেন্টলম্যান বলেছিলেন। আর এখন যে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর চোখে জেন্টলম্যান নেই সে কথা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। সুতরাং রাজভবন–নবান্নের সংঘাত প্রকাশ্যে চলে এল। কয়েকদিন আগেই এই রাজ্যপালের সঙ্গে আগের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের তুলনা করেছিলেন। আর আজ বুধবার ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সিভি আনন্দ বোসকে জোর চ্যালেঞ্জও ছুঁড়লেন।

এদিন ঝাড়গ্রামের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে রাজ্যপালকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‌বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার করছে। এই বঞ্চনা বাংলার মানুষ সহ্য করে না। মানুষ একটু ভালবাসা চায়। আমরা তা দিয়েই জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরে এনেছি। আমাদের গভর্নর মহাশয় চোখে কালো চশমা পড়ে জ্ঞান দিয়ে বেড়াচ্ছেন। যাকে খুশি উপাচার্য করে দিচ্ছেন। উনি বিজেপির লোককে বসিয়ে দিচ্ছেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। আর উনি দালালি করে যাকে খুশি বসিয়ে দিচ্ছেন। হিম্মত থাকলে আচার্য বিলে সই করে দিন। আমরা ফাইল পাঠালে ফাইলে সই করেন না। অথচ কেরল থেকে নিয়ে এসে উপাচার্য করে দিচ্ছে। মনে রাখতে উপাচার্য হতে গেলে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার।’‌

আর কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপাল বনাম শিক্ষামন্ত্রীর দ্বৈরথ লেগেই রয়েছে। রাজ্যপালের নাম দিয়েছেন ভাজপাচার্য। আজ, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি রাজ্যপালকে নিশানা করে বলেন, ‘‌ছাত্রছাত্রীদের দুর্নীতি কাকে বলে বোঝাচ্ছেন। এসব সহ্য করা হবে না। আপনি বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়ান। জিতে আসুন। সেটা ১০০ বছরেও হবে না। তার আগে বিজেপি দলটাই উঠে যাবে। বলছে মুখ্যমন্ত্রী যা করছে আমিও তাই করছি। আজই আমি ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রেজিস্ট্রার করে দেব। আলিয়ায় একজনকে ভিসি করেছেন যার শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও অভিজ্ঞতা নেই। ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে না আছেন উপাচার্য, না আছেন রেজিস্ট্রার। সার্টিফিকেট পর্যন্ত দেওয়া যাচ্ছে না। আমি মুখ্যসচিবকে অনুরোধ করছি ব্যবস্থা করার।’‌

আরও পড়ুন:‌ ‘‌সাঁওতালি ভাষায় বিএড কলেজ হবে’‌, প্রচুর শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা করলেন মমতা

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ রাজ্যপালের ‘হাতেখড়ি’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা যায় রাজভবনে। তারপর থেকেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে বারবার সুর চড়ান রাজ্যপাল। শিক্ষাক্ষেত্রেও দুর্নীতি নিয়ে সরব হন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী এদিন তোপ দাগেন, ‘‌বিজেপি খুনের রাজনীতি করছে। আগুন জ্বালানো সোজা। নেভানো কঠিন। বিজেপির এক নেতা আছেন। ভোট আসলেই বিজেপির থেকে অনেক টাকা পান। আর বলেন এটা করব। ওটা করব। কিন্তু কিছুই করবে না। সুতরাং একসঙ্গে থাকুন। বিজেপি সরকার হটানোই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আপনাদের কুর্ণিশ জানাই।’‌