Article 370 Case in Supreme Court: ৩৭০ ধারা ইস্যুতে কি ব্রেক্সিটের মতো ভোটাভুটি সম্ভব? কী বলল সুপ্রিম কোর্ট

৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরোধিতায় জমা পড়া একাধিক আবেদনের ভিত্তিতে সুপিম কোর্টে চলছে শুনানি। সেই শুনানি চলাকালীনই সুপ্রিম কোর্ট জানাল, ভারতের মতো সাংবিধানিক গণতন্ত্রে ৩৭০ ধারার মতো ইস্যুতে গণভোট করানো সম্ভব নয়। এই ক্ষেত্রে মানুষের ‘ইচ্ছে’ প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই প্রতিফলিত হতে পারে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ এই ইস্যুতে বলে, ‘সাংবিধানিক গণতন্ত্রে মানুষের মত জানতে হবে প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থার মাধ্যমেই। এই গণতন্ত্র যতদিন আছে, ততদিন মানুষের ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই। এখানে ব্রেক্সিটের মতো গণভোট করিয়ে ৩৭০ ধারা ইস্যুতে মানুষের মত নেওয়া যাবে না। তাই আইনত বৈধতা পাবে না।’

উল্লেখ্য, মামলাকারী আকবর লোনের হয়ে সওয়াল করার সময় বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল দাবি করেছিলেন, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার তখনই সম্ভব যখন মানুষ সেটা চাইছে। তিনি বলেন, ‘মহামান্য আদালতের নিশ্চয় ব্রেক্সিট মনে আছে। কী হয়েছিল? সেখানেও গণভোট চাওয়ার কোনও সাংবিধানিক বিধান ছিল না। তবে যখন কোনও সম্পর্কে ছেদ ঘটাতে চান, তখন মানুষের মত জানাটা খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ এই ধরনের সিদ্ধান্তের মূলে মানুষই রয়েছে।’ তবে এই পরামর্শর জবাবে সুপ্রিম বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, ব্রেক্সিটের মতো গণভোট এদেশে সম্ভব নয়। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত বলে, ‘সেদেশের তৎকালীন সরকার রাজনৈতিক ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোট করিয়েছিল। তবে আমাদের সাংবিধানিক কাঠামোতে এরকম কোনও বিধান নেই।’ পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট এও প্রশ্ন করে, যদি আইন প্রণেতারা ৩৭০ ধারা এবং জম্ম-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা চিরকাল অক্ষুণ্ণ রাখতে চাইত, তাহলে বিগত ৬ দশকে কেন সংবিধান সংশোধন করা হল না?

২০১৯ সালে সংসদে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয় এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন, ২০১৯ পাশ করা হয়। কেন্দ্রের এই দুই আইনের বিধান বাতিল করার দাবি জানিয়ে বেশ কয়েকটি পিটিশন জমা পড়ে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সেই পিটিশনগুলি পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি এনভি রামানার নেতৃত্বাধীন একটি সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে। পরে এনভি রামানা প্রধান বিচারপতি হন, অবসর নেন। এখন সেই মামলার শুনানি হচ্ছে বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে। এই সাংবিধানিক বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ছাড়াও আছেন বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কৌল, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, সঞ্জীব বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সূর্যকান্ত।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল। তার জেরে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা চলে যায়। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভেঙে ফেলা হয়। যে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয় একগুচ্ছ মামলা। যে মামলাগুলি মিলিয়ে ২ অগস্ট থেকে দৈনন্দিন ভিত্তিতে শুনানি শুরু হয়।