প্রজ্ঞাদীপার মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে অসন্তুষ্ট হাইকোর্ট, পুলিশকে ভর্ৎসনা বিচারপতির

চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে অসন্তুষ্ট কলকাতা হাইকোর্ট। কার্যত তদন্তে গাফিলতি তুলে ধরে পুলিশকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এর পাশাপাশি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তারপরেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসএসকেএম–এর চিকিৎসকদের দেখিয়ে দ্বিতীয় মতামত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। 

আরও পড়ুন: শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন, প্রজ্ঞাদীপার মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার সেনা চিকিৎসক

বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে প্রজ্ঞাদীপার দেহে পাওয়া একাধিক আঘাতের চিহ্ন নিয়ে প্রশ্ন করেন। সেই ক্ষতচিহ্ন কীভাবে এল? তা নিয়ে এদিন প্রশ্ন তোলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘যদি গলায় ফাঁস দিয়ে ঝোলার কারণে মৃত্যু হয় তবে দেহে ক্ষতচিহ্ন কেন আসবে? একই সঙ্গে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক কেন এ ব্যাপারে দিক নির্দেশ করেননি?’ তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তাছাড়া, ঘটনার ভিডিয়োগ্রাফি না করা নিয়েও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েন আইও। 

যদিও রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ডাক্তারের রিপোর্ট বলছে , গলায় দড়ি দেওয়ার ফলে মৃত্যু হয়েছে প্রজ্ঞাদীপার। ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড উদ্ধার হয়েছে। তিনি যে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তার কিছু প্রমাণ মিলে ছিল। তবে পুলিশের তদন্তে একাধিক গাফিলতি খুঁজে পেয়ে ভুল ধরিয়ে দেন বিচারপতি। অন্যদিকে, মৃতার পরিবারের তরফে আইনজীবী অভিযোগ করেন, মৃতের মায়ের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। তাছাড়া, এই ঘটনায় অভিযুক্ত অন্য এক চিকিৎসক। তিনি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে ফোন করে ময়নতদন্তের রিপোর্ট প্রভাবিত করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন। এমনকী ঘটনাস্থলে মৃতের দেহের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করলেও পুলিশ সেসব সামনে আনছে না বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, ভিডিয়োগ্রাফি কেন করা হয়নি সেই নিয়ে আদালত আগেই প্রশ্ন করেন তদন্তকারীদের।এর পাশাপাশি প্রজ্ঞাতে তার মায়ের সাক্ষ্য গ্রহণ করতে বলেছেন বিচারপতি

উল্লেখ্য, গত মাসে প্রজ্ঞাদীপা হালদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল বারাকপুর সেনা ছাউনির অফিসার্স কোয়ার্টার্স ম্যান্ডেলা হাউসের ২০ নম্বর ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে। ওই ঘর থেকেই একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়। সুইসাইড নোটে তিনি তাঁর লিভ ইন সঙ্গী তথা সেনাবাহিনীর এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। অভিযুক্ত সেনাবাহিনীর চিকিৎসক লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার। তাঁকে পরে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রসঙ্গত, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রজ্ঞাদীপার শরীরে অসংখ্য আঘাতের দাগ রয়েছে। ওই আঘাতগুলি মৃত্যুর আগেই তৈরি হয়েছিল।