‘হুজুর ‌দয়া করে আমাদের দেশকে বাঁচান’‌, বিচারব্যবস্থার উদ্দেশ্যে টুইট করলেন মমতা

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম পদ্ধতি নিয়ে আগেই কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিচারব্যবস্থার মধ্যে সংঘাত তৈরি হয়েছিল। এবার আবার সরকার এবং বিচার বিভাগের মধ্যে নয়া সংঘাত তৈরি করতে চলেছে কেন্দ্র। দেশের শীর্ষস্থানীয় নির্বাচনী অফিসারদের নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ভারতের প্রধান বিচারপতির আর কোনও ভূমিকা থাকবে না। গত ১০ অগস্ট রাজ্যসভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (নিযুক্তি, পরিষেবার শর্তাবলী এবং মেয়াদ) বিল, ২০২৩ পেশ করল মোদী সরকার। এই বিলের প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য কমিশনারদের নাম সুপারিশ করবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত একটি প্যানেল। আর সুপারিশ মেনে রাষ্ট্রপতি তাঁদের নিয়োগ করবেন। এই নিয়ে আজ শনিবার তোপ দাগলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এই বিলের বিরোধিতা রাজ্যসভায় করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা। এবার তা নিয়ে টুইট করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, টুইটে গোটা ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো লিখেছেন, ‘‌বিচারব্যবস্থার মাথানত করতে চাইছে বিজেপি সরকার। পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকার অরাজকতাকে মাথাচাড়া দেওয়াতে চাইছে।’‌ ২০২৩ সালের মার্চ মাসেই সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের সুপারিশ করবে একটি প্যানেল। সেই প্যানেলে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ছাড়াও ভারতের প্রধান বিচারপতিকে রাখতে হবে। কেন্দ্রের এই নয়া আইন পাশ করলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কোনও মূল্য থাকবে না।

এদিকে আজ, কোলাঘাটে বিজেপির পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলায় উপর্যুপরি হিংসার ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। সেখানে রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‌নির্বাচনে জয়ের পরও তৃণমূল প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রক্ত নিয়ে হোলি খেলা শুরু করেছে। যারা নিজেরা ভোট লুঠের অভিযোগ করত, যারা নিজেদের গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন বলে দাবি করত, সেই তৃণমূলের লোকেদেরই টিভির পর্দায় ব্যালট বাক্স নিয়ে পালাতে দেখাগিয়েছে। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। গুন্ডাদের বরাত দেওয়া হয়েছিল বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে। লোকসভা নির্বাচনে সেটা হবে না।’‌

আরও পড়ুন:‌ গল্ফগ্রিনে যুবতীকে ছুরি দিয়ে কোপাল প্রেমিক, প্রাণে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন প্রাক্তন স্বামী

ঠিক কী লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আজ টুইটে লেখেন, ‘‌মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ঠিক করতে দেশের প্রধান বিচারপতির তিন সদস্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিরোধিতা করছি এই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ঠিক করার প্রক্রিয়া থেকে প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিতে। ওদের এই অস্বস্তিই বুঝিয়ে দিচ্ছে ভোট কারচুপি করতেই এটা চাইছে। ‘‌ইন্ডিয়া’‌ প্রশ্ন করবেই বিচারব্যবস্থাকে অবমাননা করার বিষয়ে। ওরা কি মন্ত্রী পরিচালিত ক্যাঙারু কোর্ট চালু করতে চাইছে?‌ আমরা ভারতের বিচারব্যবস্থার কাছে প্রার্থনা করছি, হুজুর আমাদের দেশকে বাঁচান।’‌