ফৌজদারি মামলায় জড়িতের পাসপোর্ট পেতে বাধা নয়, জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট

কোনও ব্যক্তি বা মহিলা ফৌজদারি মামলায় জড়িত থাকলে পাসপোর্ট কি পাবেন?‌ এই প্রশ্ন বহুদিন ধরেই উঠতে শুরু করেছে। এমনকী নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে বিষয়টি নিয়ে। তাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মানুষজনও। কারণ নানা কারণে অনেকেই এখন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হন। তখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহিলার বিরুদ্ধে মামলা চলে। সুতরাং গোটা বিষয়টি থাকে বিচারাধীন। আবার যদি অভিযুক্ত বলে প্রমাণিতও হন তাহলেও তার সঙ্গে পাসপোর্ট পাওয়া বা না পাওয়ার কোনও সম্পর্ক থাকে না। সুতরাং ফৌজদারি মামলায় কেউ অভিযুক্ত হলেই যে তিনি পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার হারাবেন সেটা হতে পারে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

কেন অভিযুক্ত পাসপোর্ট পাবেন?‌ কলকাতা হাইকোর্ট এই নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে। সেটি হল—সংবিধানের ১৪ এবং ১৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কেউ ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলে তিনি পাসপোর্ট পাবেন না এটা হতে পারে না। কারণ এটা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে জড়িত। যদি পাসপোর্ট দেওয়া না হয় তাহলে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হবে। কিন্তু সেই পাসপোর্ট আদালত চাইলে জমা রাখতে পারে। পুলিশ আদালতের নির্দেশে নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারেন। কিন্তু পাসপোর্ট দেওয়াই হবে না এমনটা নয়।

কেন এমন রায় দিল হাইকোর্ট?‌ হুগলির এক মহিলা বাসিন্দার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁর আবেদন করা পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ তুলে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এই মামলার শুনানি শোনেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। গোটা বিষয়টি শুনে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নিম্ন আদালতকে নো–অবজেকশন রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেন। আর মহিলার পাসপোর্টের পক্ষেই দাঁড়ান। এমনকী আগামী একসপ্তাহের মধ্যে নো– অবজেকশন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌জীবনটা রেখে কী হবে? এত অপমান’‌, যাদবপুরের ঘটনায় স্মৃতিচারণে মেয়র ফিরহাদ

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ আদালত সূত্রে খবর, ওই মহিলার নাম দেবরিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা। তাঁর নামে একটি ফৌজদারি মামলার অভিযোগ রয়েছে। তাই পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে গেলে পাসপোর্ট অথরিটিকে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, একমাসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মামলাকারীর আইনজীবী কমলেশ ভট্টাচার্য এবং উত্তমকুমার রায় জানান, স্থানীয় যুবক পবিত্র সরকারের হঠাৎ মৃত্যু হয়। ওই যুবকের মৃত্যুর পর একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। যেখানে এই মহিলার নাম ছিল। যদিও সেটার সঙ্গে আত্মহত্যার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু ফৌজদারি মামলা হওয়ায় পাসপোর্ট আটকে গিয়েছিল। যা এবার মিলবে আদালতের নির্দেশে।