বকেয়া টাকা চেয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরকে চিঠি পুরসভার, সরকারি অনুষ্ঠান নিয়ে বিপাকে মেয়র

কলকাতা পুরসভার কোষাগারে এখন টান পড়েছে। তাই সরকারি অনুষ্ঠানের খরচ টানতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে কলকাতা পুরসভাকে। এই আবহে আগামী ২২ অগস্ট নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দুর্গাপুজো কমিটিগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২২ সালে এই অনুষ্ঠান করতে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা কোষাগার থেকে খরচ করেছিল কলকাতা পুরসভা। তারপর সেই টাকা ফেরত চেয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরকে বারবার চিঠি লেখে পুরসভা। কিন্তু উত্তর মেলেনি। সেখানে গোদের উপর বিষফোঁড়া হিসাবে দেখা দিয়েছে চলতি বছরের অনুষ্ঠানের খরচ বহন করতে কলকাতা পুলিশ চিঠি দিয়েছে পুরসভাকে।

এদিকে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বকেয়া টাকা না পেয়ে চাপে পড়ে গিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আর সেটি মুখ ফুটে বলতেও পারছেন না। তাই মেয়র অফিসারদের জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানের খরচ স্বরাষ্ট্র দফতরকেই করতে হবে। কলকাতা পুরসভা করবে না। তারপরই মেয়রের নির্দেশে ২০২২ সালের অনুষ্ঠানের খরচের ফাইল আবার নবান্নে পাঠানো হয়েছে। সেখানে খাবারের প্যাকেট ও প্যান্ডেল বাবদ খরচ হয়েছিল ৪৯ লক্ষ ২৫ হাজার ৯৫০ টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর যে সংস্থা খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করেছিল তারা এখনও ৯ লক্ষ টাকা পাবে। ফলে এবার বকেয়া না দিলে খাবার দেবে না তারা বলে সূত্রের খবর।

অন্যদিকে অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীরা এখন পেনশনের টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বকেয়া টাকা পেতে ঠিকাদাররা দরবার করতে শুরু করেছেন। এমন আবহে কলকাতা পুরসভা সরকারি অনুষ্ঠানের খরচ করতে চাইছে না। এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘কলকাতা পুরসভা অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন, ঠিকাদারদের বকেয়া দিতে পারছে না। কোষাগারে মারাত্মক টান রয়েছে। কারণ বিপুল খরচে সরকারি অনুষ্ঠান হচ্ছে।’‌ এই বকেয়া ৫০ লক্ষ টাকা চেয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব অমিতাভ সেনগুপ্তকে দু’বার চিঠি দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তাতে অবশ্য কোনও লাভ হয়নি।

আরও পড়ুন:‌ স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে রিপোর্ট তলব করল ইউজিসি, কেন্দ্রীয় অনুদান কি বন্ধ হতে পারে?‌

তাহলে এবার কী হবে?‌ এবার ২২ তারিখ অনুষ্ঠান হবে। সেখানে খরচ করা নিয়ে কলকাতা পুলিশের চিঠি এসে পৌঁছেছে কলকাতা পুরসভায়। তাতে আরও চাপ বেড়েছে। এই চিঠি পেয়ে বিষয়টি পুরসভার সচিব মেয়রকে জানান। তাতে মেয়র চিন্তায় পড়ে যান। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বলে মেয়র পুরসভার অফিসারদের দরপত্র ডাকার অনুমতি দেন। সূত্রের খবর, টাকা চেয়ে অফিসারদের প্রয়োজনীয় নোট পাঠাতে নির্দেশ দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবে এই নিয়ে নবান্নের কেউ মুখ খোলেননি।