স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে গ্রেফতার আরও দু’‌জন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং নিয়েই আলোড়ন

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে স্বপ্নদীপের উপর অত্যাচার হয়েছিল বলে মনে করছে পুলিশ। আর যত তদন্ত এগোচ্ছে তত সিলমোহর পড়ছে র‌্যাগিংয়ের উপর। এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ থেকে ১২ জন পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। হস্টেল থেকে উদ্ধার হওয়া কালো ডায়েরি নিয়েই রহস্য দানা বেঁধেছে। আর তারপরই আজ, রবিবার যাদবপুর কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল আরও দু’‌জন ছাত্রকে। আগেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তথা হস্টেলের আবাসিক সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাকে জেরা করেই বাকি দু’জনের নাম মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

এদিকে ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুতে গ্রেফতার হওয়া দু’‌জন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। গ্রেফতার হওয়া দু’‌জনের নাম—মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্ত। স্বপ্নদীপ থাকত মনোতোষের ঘরেই। সেখানে তাঁকে রাখা হয়েছিল মনোতোষের গেস্ট হিসাবে। সেখানেই দুই অভিযুক্ত স্বপ্নদ্বীপকে আগে নানা মানসিক চাপ দিয়েছিল। সেই প্রমাণও পুলিশের হাতে এসে গিয়েছে। সৌরভ চৌধুরী ছাড়াও এই মনতোষ ঘোষের নামে অভিযোগ করেন খোদ স্বপ্নদ্বীপের বাবাও বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শনিবার রাতভর জেরা করা হয়েছে এই দুই ছাত্রকে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জয়েন্ট সিপি ক্রাইম শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তী, ডেপুটি কমিশনার সাউথ সাব আর্বান ডিভিশন বিদিশা কলিতা।

অন্যদিকে এই দুই ছাত্রকে জেরা করার সময় নানা অসংলগ্ন কথা বলতে থাকে তারা। বেশ কিছু প্রমাণ সামনে নিয়ে আসা হয়। যার উত্তর তারা দিতে পারেননি। আর তখনই রবিবার সকালে দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। মনোতোষের নাম এফআইআরে ছিল না। সৌরভ চৌধুরীকে জেরা করে মনোতোষ এবং দীপশেখরের নাম জানতে পারে পুলিশ। তার পর তাদের থানায় ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে সারারাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অবশেষে সকালে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে না পারায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। এই দু’‌জন ছিল ‘সৌরভের’ ডান ও বাম হাত। হস্টেলেও ছিল প্রবল দাপট। এমন সব তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ‘‌বাংলায় একদিন সরকার গড়বে বিজেপি’‌, দলীয় নেতাদের ভোকাল টনিক নড্ডার

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া দুই ছাত্রের মধ্যে দীপশেখর দত্তর বাড়ি বাঁকুড়ায়। মনোতোষ ঘোষের বাড়ি হুগলির আরামবাগে। রাতভর দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সকালে করা হয় গ্রেফতার। দুই পড়ুয়ার মধ্যে মনোতোষ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দীপশেখর অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দু’জনেই আর্টসের ছাত্র সংগঠন ‘ফোরাম ফর আর্টস স্টুটেন্ডসের’ সক্রিয় সদস্য। হস্টেলের ১০৪ নম্বর ঘরে থাকত মনোতোষ। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ২২ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে থাকতে হবে সৌরভকে। তাকে জেরা করে আরও তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে পুলিশ।