Manipur: বলিউড ফিরছে মণিপুরে, দু দশক পরে দেখানো হবে হিন্দি সিনেমা, স্বাধীনতা দিবসে নিষেধাজ্ঞার অবসান, বইছে খোলা হওয়া…

উৎপল পরাশর

মহিলা বক্সার মেরি কম। তাঁকে নিয়ে সিনেমা তৈরি হয়েছিল ২০১৪ সালে। ভারতের অন্যতম দক্ষ মহিলা বক্সার। আদপে তিনি মণিপুরের বাসিন্দা। কিন্তু তাঁর নিজের রাজ্যেই সেই সিনেমা দেখানোর ‘অধিকার’ ছিল না। কারণ একটি নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠী বলিউড ফিল্ম দেখানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে এখনও।

তবে হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরে এবার অন্য ছবি। বলা যায় খোলা হাওয়া। সেখানে মঙ্গলবার পালিত হল স্বাধীনতা দিবস। আর সেই স্বাধীনতা দিবসে দেশপ্রেম প্রদর্শনের অঙ্গ হিসাবে একাধিক হিন্দি সিনেমা দেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটি কুকি সংগঠনের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আর সেই তালিকায় স্থান পেল হিন্দি সিনেমা।

হমার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রেস রিলিজ দিয়ে এই কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসে এইচএসএ ক্যাম্পাসে কুকি অধ্যুষিত চূড়াচান্দপুর জেলায় এই সিনেমা দেখানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সন্ধ্যা সাতটা থেকে এই সিনেমা দেখানোর ব্যবস্থা করা হবে। আর তার মধ্য়ে অন্যতম সিনেমা হল, উরি-দ্য় সার্জিকাল স্ট্রাইক।

সেই ৩ মে থেকে ভয়াবহ হিংসা দেখেছে মণিপুর। কুকি ও মৈতেয়ী সম্প্রদায়ের মধ্য়ে রক্তক্ষয়ী লড়াই। অন্তত ১৬০জনের প্রাণ গিয়েছে এই সংঘর্ষে। মৈতেয়ী গ্রুপ কুকিদের ইতিমধ্য়েই জঙ্গি বলে দাগিয়ে দিয়েছে। তাদেরকে মায়ানমার থেকে আসা বেআইনী অনুপ্রবেশকারী, অবৈধ পাচারকারীর বলে বার বার দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে এভাবে কুকিদের সকলকে এক সারিতে ফেলাটা একেবারেই মেনে নিতে পারেননি তাঁরা। এবার আসা যাক সেই হিন্দি সিনেমা নিষিদ্ধকরণের প্রসঙ্গে।

সেটা ছিল ২০০০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। পিপলস লিবারেশন আর্মির শাখা সংগঠন রেভলিউশনারি পিপলস ফ্রন্ট নামে একটা সংগঠন হিন্দি সিনেমা দেখানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সিনেমা হল কিংবা কেবল অপারেটররা এই হিন্দি সিনেমা যাতে না দেখান তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

সেই সময় এনিয়ে কোনও নির্দিষ্ট কারণ বলা হয়নি। তবে মনে করা হয় মণিপুরী সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বলা হয় শেষবার মণিপুরে শাহরুখ খানের কুছকুছ হোতা হ্যায় দেখানো হয়েছিল। সেই শেষ। তবে ইংরেজি, কোরিয়ান, মণিপুরী সিনেমা ভালোই চলে সেখানকার হলে।

তবে এতদিনে এল খোলা হাওয়া। ITLF জানিয়েছে, সন্ত্রাসের রাজত্বের শেষ। প্রতি ভারতীয় নাগরিকের অধিকার রয়েছে বহু ভাষার সিনেমা দেখার।দমনমূলক নীতি চলতে পারে না।