Rahul Gandhi on Independence Day: ‘প্রত্যেক ভারতীয়র কণ্ঠস্বর ভারত মাতা’, স্বাধীনতা দিবসে দীর্ঘ খোলা চিঠি রাহুল গান্ধীর

কয়েকদিন আগে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনার সময় ভাষণ দিতে উঠে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আজ স্বাধীনতা দিবসে তাঁর লেখা খোলা চিঠিতেও আছে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অভিজ্ঞতা। তিনি এক্স প্ল্যাটফর্মে (পূর্বতন টুইটার) নিজের খোলা চিঠি পোস্ট করেন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘প্রত্যেক ভারতীয়র কণ্ঠস্বর ভারত মাতা’। চিঠিতে রাহুল লেখেন, ‘গত বছর ১৪৫ দিন ধরে আমি আমার মাতৃভূমি দিয়ে হেঁটেছি। সমুদ্রতট থেকে শুরু হয়েছিল সেই যাত্রা। রোদ, গরম, ধুলো ও বৃষ্টিতে হেঁটেছি। জঙ্গল, শহর, পাহড় দিয়ে হেঁটেছি। যতক্ষণ না আমার প্রিয় কাশ্মীরের নরম তুষারে পা রেখেছি, ততক্ষণ হেঁটেছি।’ রাহুল দাবি করেন, তিনি এই যাত্রা থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।

রাহুল নিজের চিঠিতে লেখেন, ‘আমরা গাদাগাদি করে স্লোগান তুলে ক্যামেরার সামনে দিয়ে হেঁটে চলতাম। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টায় এভাবেই হাঁটতাম আমরা। তবে একদিন আমি যাত্রায় নিস্তব্ধতা অনুভব করলাম। আমি অন্য কিছু শুনতে পেলাম না। তবে একজন কৃষক আমার হাত ধরেছিলেন। তিনি আমার কানে কানে কিছু বলছিলেন। আমি শুধু সেটাই শুনতে পেলাম। তিনি আমার সামনে পচে যাওয়া তুলো ধরেছিলেন। আমি তাঁর হাতে বহু বছরের কঠোর পরিশ্রমের চিহ্ন দেখতে পেলাম। আমি তাঁর চুপষে যাওয়া মুখের দিকে তাকাম। আমি বুঝলাম, সারা রা তনা খেয়ে থেকেছেন তিনি। তাঁর চেহারায় ক্ষুধা ফুটে উঠেছিল। আমি হাঁটা থামিয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরলাম।’ রাহুল বলেন, ‘এরপর থেকে এমনটা বারবার হয়েছে আমার সাথে। শিশুরা আমার সঙ্গে এসে কথা বলেছে। মায়েরা কথা বলেছে। বিভিন্ন বয়সের পড়ুয়ারা আমার সঙ্গে এসে কথা বলেছে। আর এই সময়গুলিতে আমি তাদের ছাড়া আর অন্য কারও কথা শুনতে পেতাম না। কোনও আওয়াজ আমার কানে যেত না। আমার মন শুধু তাদের কথার দিকেই থাকত।’

এদিকে অত ঠান্ডায় যাত্রার সময় শুধুমাত্র একটি টি-শার্ট পরে কেন হেঁটেছিলেন? তাঁরও জবাব নিজের খোলা চিঠিতে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। রাগা দাবি করেন, যাত্রার সময় এক শীতের সকালে তিনি দেখেন কয়েকজন শিশুকে ভিক্ষা করতে বাধ্য করা হয়েছে। এবং সেই শিশুরা ঠান্ডায় কাঁপছে। এরপর থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, যতদিন সহ্য করতে পারবেন, ততদিন তিনি শুধুমাত্র একটি টি-শার্ট পরেই হাঁটবেন। রাহুল খোলা চিঠিতে লেখেন, ‘ভারতের কণ্ঠস্বর শুনতে, নিজের আওয়াজ শুনতে, নিজের ইচ্ছে ও আকাঙ্খাকে চুপ করাতে হত। ভারত তার কথ শোনাবে। তবে যে শুনবে তাকে নিশ্বার্থ হতে হবে। তাঁকে সেই কথা শোনার জন্য চুপ থাকতে হবে। আমি যা নদীতে খুঁজছিলাম, তা ছিল সাগরে।’