অবশেষে অন্তর্বর্তী উপাচার্য পেল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নিয়োগ করলেন রাজ্যপালই

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শিক্ষা দফতরকে সাইডলাইন করে উপাচার্য নিয়োগ করে যাচ্ছেন। এই অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছে রাজ্য সরকার। তার মধ্যেই সমস্যা দেখা দিয়েছিল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানে ছিল না উপাচার্য। যার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ থমকে গিয়েছিল। পড়ুয়াদের চরম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এখানে মোহনপুর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন পড়ুয়ারা। তাঁদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে ক্যাম্পাস। অবশেষে উপাচার্য পেল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে গৌতম সাহাকে নিয়োগ করলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

এদিকে এই কাজটা করতে রাজ্যপালের এত দেরি হল কেন?‌ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ তিনি যাঁকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করলেন, সেই ব্যক্তি এই বিশ্ববিদ্যালয়েই কর্মরত ছিলেন। বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়নি। অর্থাৎ অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনতে হয়নি। অন্তর্বর্তী উপাচার্য গৌতম সাহা ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এগ্রিকালচার মেটেরলজি এবং পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক। তাঁর কাছে রয়েছে পিএইডি ডিগ্রিও। তাহলে তাঁকে আগেই এই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারত। রাজ্যপালের গড়িমসির জন্যই এত সমস্যায় ভুগতে হয়েছিল পড়ুয়াদের বলে অভিযোগ। এবার সেই গৌতম সাহাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করলেন আচার্য।

কেন সমস্যা তৈরি হল?‌ বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা একাধিকবার অভিযোগ করেছিলেন এখানে উপাচার্য নেই। তার ফলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কোনও কাজ করা যাচ্ছে না। কারণ উপাচার্যের সই ছাড়া অনেক প্রশাসনিক কাজ আটকে যায়। তার ফলে পড়ুয়াদের বিপাকে পড়তে হয়। তাই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। রাজ্যপালের কাছেও সেই সমস্যার কথা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। ক্যাম্পাস খোলা থাকলেও উপাচার্য ছিল না। তার জেরে ঠিকঠাক ক্লাস হচ্ছিল না। এমনকী উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু আধিকারিক, শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারীরা।

আরও পড়ুন:‌ স্কুল শিক্ষক–শিক্ষিকাদের পদোন্নতির সুযোগ করতে চলেছে নবান্ন, জোর আলোচনা

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্রই সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষা দিয়ে এখানে পড়াশোনা করতে এসেছেন। যাঁরা ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁরা সঠিক সময়ে মার্কশিট পাননি বলে অভিযোগ। একাধিক বিভাগে প্রত্যেক দিনের গবেষণার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছিল। কারণ এখানে নেই কোনও গবেষণাগারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরঞ্জাম বলে অভিযোগ। হস্টেলের পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। এইসব দাবি নিয়েই আন্দোলনে নেমেছিলেন পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। অবশেষে দীর্ঘ টালবাহানার পর আচার্য সিভি আনন্দ বোসের হস্তক্ষেপে উপাচার্য পেল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।