নির্বিচারে গ্রেফতার, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা ন্যায় বিচারের পথে অন্তরায়-CJI চন্দ্রচূড়

স্বাধীনতা দিবসে প্রতিটি মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার ওপর জোর দিলেন সুপ্রিম কোর্ট তথা দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। এছাড়াও, নির্বিচারে গ্রেফতার এবং বেআইনিভাবে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রধান বিচারপতির মতে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পথে যে সমস্ত বাধা রয়েছে তা দূরে সরিয়ে ফেলতে হবে। পাশাপাশি প্রান্তিক মানুষের কাছে বিচার ব্যবস্থাকে পৌঁছে দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি মনে করেন, তারজন্য একটি রোড ম্যাপ তৈরি করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: খোলনলচে বদলে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের, বাড়বে আদালত কক্ষ, জানালেন প্রধান বিচারপতি

স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট মানুষের আস্থার জায়গা হয়ে উঠুক। বিচারপতি এবং আইনজীবীদের এমনভাবে আচরণ করা উচিত যা আইনি প্রক্রিয়ার স্বাধীনতা এবং অখণ্ডতা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসকে অনুপ্রাণিত করে।  আমি আইনজীবীদের অনুরোধ করছি কোনও অভিযোগ থাকলে আদালতের বাইরে ছুটে যাবেন না। আপনার কাছে পরিবারের প্রধান বসে আছে তা সমাধান করার জন্য।

প্রধান বিচারপতি এদিন আরও বলেন, ‘অনেককেই নির্বিচারে গ্রেফতার করা হয় বা যাদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বা সম্পত্তি বেআইনিভাবে বাজেয়াপ্ত করা হয়। নির্বিচারে গ্রেফতার বা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত  ন্যায় বিচারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।’ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই মন্তব্য করে ঘুরিয়ে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে নিশানা করেছেন প্রধান বিচারপতি। কারণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত বা জোরপূর্বক গ্রেফতারি ঘটনা দেখা যায় উত্তর প্রদেশ থেকে শুরু করে বহু বিজেপি শাসিত রাজ্যে। সেখানে বুলডোজার চালিয়ে বাড়িঘর  গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। তাছাড়া, দাঙ্গার মতো ঘটনা ঘটলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এই প্রবণতা বেশি হয়। এই নিয়ে পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টও তুলোধোনা করেছে।

এদিন প্রধান বিচারপতি বক্তব্য রাখার সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রের আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল। এদিকে, লাল কেল্লায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বক্তব্য রাখতে গিয়ে আঞ্চলিক ভাষায় সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুবাদ নিয়ে প্রশংসা করছিলেন। সেই কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক ভাষায় রায় অনুবাদ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন। এখনও পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের ৯,৪২৩টি রায় আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।’ এছাড়াও মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ১৯ হাজারের বেশি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি।