যাদবপুর ছাত্র মৃত্যুতে সৌরভ আর দীপশেখরের ভূমিকা ঠিক কী? একসঙ্গে জেরা করবে পুলিশ

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আপাতত ৯ জন পুলিশ হেফাজতে আছে। তবে তাদের বক্তব্যে নানা ধরনের অসঙ্গতি খুঁজে পাচ্ছে পুলিশ। এই অবস্থায় ধৃতদের বয়ানের সত্যতা যাচাই করতে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার পরিকল্পনা করেছে কলকাতা পুলিশ।

আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলায় যুক্ত করা হল রাজ্যপালকে, আচার্য কেন অন্তর্ভূক্ত?

ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পরেই পুলিশ হস্টেলে তল্লাশি চালায়। সেখান দুটি ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে। প্রথম ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে হস্টেলে নিহত ছাত্রের ঘর থেকে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ডায়েরি উদ্ধার হয় সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতারের পর। তাকে গ্রেফতারের পরেই ১২ অগস্ট হস্টেলের ১০৪ নম্বর ঘরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ওই ডায়েরিটি উদ্ধার হয়েছে। এদিকে, সৌরভকে গ্রেফতার করার পর জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে একটি চিঠির কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সেই চিঠির কথা উল্লেখ ছিল দ্বিতীয় ডায়েরিতে। সেখানে জানা যায়, ওই চিঠি লেখানোর পরিকল্পনা ছিল সৌরভের। যদিও সৌরভ দাবি করেছে, চিঠি লেখার সময় সে ছিল না। তবে ধৃত দীপশেখর দত্ত সেই চিঠিটি পড়ুয়ার হয়ে লিখেছিল বলে স্বীকার করেছে। এই চিঠি এবং ডায়েরি নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। ধৃতদের কথায় অসঙ্গতি খুঁজে পাচ্ছে পুলিশ। তাই তাদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার চিন্তাভাবনা করছেন তদন্তকারীরা। যদিও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। 

গত ৯ আগস্ট রাতে যাদবপুর হস্টেলের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে যায় প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়া। নগ্ন এবং অচৈতন্য অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরেই খুনের অভিযোগ জানান মৃত ছাত্রের পরিবার। তার ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে পুলিশ সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে। এর পর দীপশেখর দত্ত এবং মনোতোষ ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের নাম হল–অজিত সর্দার, সুমন নস্কর, সপ্তক কামিল্যা, মহম্মদ আরিফ, আসিফ আজমল আনসারি এবং অঙ্কন সরকার। এরমধ্যে মহম্মদ আরিফ জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা। সে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এছাড়াও, পুলিশের নজরে রয়েছে আরও এক ছাত্র। তাকে দ্রুতই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন তদন্তকারীরা। অন্যদিকে, ঘটনার দিন কী হয়েছিল তা জানতে পুনর্নির্মাণ করবে পুলিশ। সপ্তক কামিল্যাকে নিয়েই এই পুনর্নির্মাণ করা হবে। জানা গিয়েছে, পাশ করার পরেও হস্টেলে ছিল সে। ঘটনার পরেই সে বাড়িতে পালিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।