Controversy of Constitution: ‘নয়া সংবিধান আনা হোক’, বললেন মোদীর উপদেষ্টা! সরকারের বক্তব্য কী?

কয়েকদিন আগেই রাজ্যসভায় ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ভারতের সংবিধানের মূল কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আর স্বাধীনতা দিবসের আগে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায় বলেন, ‘এই সংবিধান পুরোপুরি পরিবর্তন করে নয়া সংবিধান আনা উচিত’। এই নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। এই আবহে বিবেকের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মুখ খুলল সরকার। জানিয়ে দেওয়া হল,সংবিধান নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা পুরোপুরি বিবেক দেবরায়ের ব্যক্তিগত। এই মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ বা সরকারের মনোভাবের প্রতিফলন নয়। তবে সরকার এই মন্তব্যের থেকে দূরত্ব তৈরি করে বিতর্ক এড়াতে চাইলেও বিরোধীরা চেপে ধরেছে। তাদের প্রশ্ন, সরকারের এত উচুঁ পদে আসীন এক ব্যক্তি এই ধরনের মন্তব্য করছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। তিনি সেই পদেই আসীন থাকছেন, তাহলে তার থেকে কী বুঝে নিতে হবে?

এর আগে দিল্লি সার্ভিসেস বিল নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন রাজ্যসভায় ভাষণ রাখেন ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। দিল্লি সার্ভিসেস বিলের পক্ষে বলতে গিয়ে আকারে ইঙ্গিতে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো নিয়েই ‘প্রশ্ন তোলেন’ ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। যা নিয়ে কংগ্রেস প্রশ্ন তোলে। রঞ্জন গগৈ বলেছিলেন, ‘আমার উপলব্ধি, বিধানসভাগুলি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জন্য আইন তৈরি করে। সংসদ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য আইন তৈরি করে। সঙ্গে জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লির জন্যও আইন তৈরি করে। এখানে আমাদের প্রশ্ন করতে হবে দিল্লি সার্ভিসেস বিল সংবিধানের মৌলিক কাঠামো লঙ্ঘন করে কি না। আর আমি এখানে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো নিয়ে কিছু বলতে চাই। ভারতের প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল তেহমতান আর আন্ধ্যারুজিনার লেখা একটি বই আছে। সেই বই পড়ে আমার মত হচ্ছে, সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর যে আইনশাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে রয়েছে, তা বিতর্কিত। আমি এর থেকে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।’

এর বিরোধিতায় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল বলেছিলেন, ‘আমি হতবাক যে একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর আইনি ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এটা কি বিজেপির কোনও চাল? চারা কি সংবিধানকে পুরোপুরি বদলে দিতে চাইছে? তারা কি মনে করে যে গণতন্ত্র, সাম্য, ধর্মনিরপেক্ষতা, ফেডারেলিজম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সবই বিতর্কিত ধারণা? অবশ্য এটা আমাকে অবাক করে না। তাদের কোনও দিনই সংবিধানের প্রতি কোনও সম্মান ছিল না। আর এখন ‘বিতর্কিত’ ট্র্যাক রেকর্ড থাকা এক প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে দিয়ে সংবিধানকেই আক্রমণ করাচ্ছে বিজেপি। এখানে রঞ্জন গগৈয়ের যুক্তি কী? তিনি কি বলছেন যে মৌলিক কাঠামো বলে কিছু নেই, আর তাই কোনও কিছুই রক্ষা করার প্রয়োজন নেই? সরকার কি তাঁর এই মতকে সমর্থন করে? সরকারের উচিত এই চিন্তাধারার বিরোধিতা করা। নয়ত বোঝা যাবে যে আমাদের সংবিধানকে নষ্ট করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।’ প্রসঙ্গত, রঞ্জন গগৈকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে অনেক বিতর্কই হয়েছিল। এদিকে রঞ্জন গগৈয়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সরকার কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।