JU Ragging Case : মুখচোরা ছেলেগুলোর এমন কাণ্ড! অবাক পাড়া-প্রতিবেশী, মামলার খরচ নিয়েও চিন্তা

যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ১৩জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্য রয়েছে সত্যব্রত রায়, নাসিম আখতার এবং হিমাংশু কর্মকার। এদের গ্রেফতারিতে হতবাক পড়শিরা। মুখচোরা ছেলেগুলো র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার হতে পারে ভাবতেও পারছেন না কেউ।

প্রদীপ ও রুমা রায়ের ছেলে সত্যব্রত রায়। পেয়ারা বিক্রি করে কোনও মতে সংসার চালান নদিয়ার হরিণঘাটার প্রদীপ রায়। কিন্তু একা হাতে সংসার চালিয়ে ছেলের পড়াশোনার হাল ধরা সম্ভব নয়। তাই সেলাইয়ের কাজ নিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী রুমা। মেসের রেখে পড়াশুনোর খরচ অনেক বেশি। তাই সত্যব্রত মেসে থাকতে চাইলেও হস্টেল পেয়ে যাওয়ার দিকেই তাকিয়ে ছিলেন তাঁরা। হস্টেল পেয়ে যেতে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই হস্টেলেই যে এমন কাণ্ড হবে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি তাঁর। এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের ছেলে জড়িয়ে পড়ায় হতবাক বাবা-মা।

একই ছবি নাসিম আখতারের পরিবারেও। উচ্চশিক্ষার খরচ তোলার জন্য নিজের মুদির দোকানা বন্ধক রেখেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির মহসিন আখতার। তিনি এখনও বিশ্বাসই করেত পারছেন না যে ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের নিমতিতার বাসিন্দা হিমাংশু কুমারের পরিবার মেনে নিতে পারেছেন না ছেলের গ্রেফতারি।

(পড়তে পারেন। ‘প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখেই সিসিটিভি নিয়ে সিদ্ধান্ত!’ছুটির দিনে JU-তে নতুন উপাচার্য)

সত্যব্রতর বাবা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনার পর ছেলেকে বাড়ি আসতে বলায় ও বলেছিল, এখন বাড়ি আসতে পারবে না। গেলে সবাই সন্দেহ করবে।’ তাঁর মা বলেন, ‘ছেলের পড়ার খরচ জোগাতেই হিমশিম খাচ্ছিলাম। এখন কোর্টের খরচ পাব কোথা থেকে?’

গ্রামের হাইস্কুলে মাধ্যমিক পাশ করার পর খড়্গপুর আল-আমিন মিশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন নাসিম আখতার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন তিনি। এক বছর আগে স্নাতকোত্তর শেষ হয়ে গেলেও হস্টেলেই রয়ে গিয়েছিলেন নাসিম। ছাত্র মৃত্যুর সঙ্গে তাঁদের ছেলের নাম জুড়ে যাবে তা ভাবতেই পারছেন না।

হিমাংশু কর্মকার গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁর সামশেরগঞ্জের নিমতিতার বাড়ি ছাড়ের পরিবারের লোকজন। এলাকার বাসিন্দারা কথায়, বছর দশেক আগে মৃত্যু হয়েছে হিমাংশুর বাবার। বাড়িতে থাকতেন তাঁর মা এবং এক দিদি। শুক্রবার সকালে বাড়িতে তালা দিয়ে তাঁরা কোথায় চলে গিয়েছে তা কেউ জানে না।