পোস্টিং দুর্নীতি মামলায় কোমর বেঁধে নামল সিবিআই, তলব করল বেশ কয়েকজন শিক্ষককে

প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি দুর্নীতি মামলায় ৫০ জন শিক্ষককে তলব করল সিবিআই। এই শিক্ষকরা টাকার বিনিময়ে পছন্দের পোস্টিং নিয়েছেন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আগে এই ঘটনাকে পরিকল্পিত দুর্নীতি বলে মন্তব্য করেছিলেন। এখন আদালতের নির্দেশে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। তাঁকে জেরাও করে সিবিআই। আজ, সোমবার ৫০ জন শিক্ষককে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে। এই পোস্টিং দুর্নীতি মামলায় চলতি সপ্তাহে মোট ৪০০ জন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং তারপর কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দেবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।

এদিকে পোস্টিংয়ের মামলায় এই প্রথম এতজন শিক্ষককে তলব করা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, প্রয়োজন পড়লে ৩৪৪ জন প্রাথমিক শিক্ষককেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই। তাই এই তলব বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের দুই জেলার ডিআই দফতরে নোটিশ পাঠিয়েছে সিবিআই। আর জেলা ধরে হাজিরা দিতে ডাকা হচ্ছে নিজাম প্যালেসে। আজ, সোমবার থেকেই হাজিরা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন শিক্ষক নিজাম প্যালেসে ঢুকে পড়েছেন। আর এই ডিআই অফিস থেকেই সিবিআই হাজিরার কথা বলা হয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআই কিছু তথ্য পেয়েছে। তাদের দাবি, অনেকেই মেধাতালিকার পিছনে থেকেও স্রেফ টাকা দিয়ে পছন্দমতো স্কুলে পোস্টিং নিয়েছেন।

অন্যদিকে ২০২০ সালে প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ হয়। আর তাতেই শিক্ষকদের পোস্টিং নিয়েয়ে ‘দুর্নীতি’ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোন স্কুলে কার পোস্টিং হবে সেটা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। আর কয়েকজন শিক্ষক তা নিয়ে মামলা করেন। এই বিষয়ে সিবিআই–ইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সে দিনই রাতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে মানিক ভট্টাচার্যকে জেরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। এবার প্রাথমিক শিক্ষকদের তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই অফিসাররা। ডিআই অফিসের পদাধিকারীদের এবং অর্থের বিনিময়ে পছন্দের পোস্টিং পাওয়া শিক্ষক–শিক্ষিকাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই কোমর বেঁধে নেমেছেন সিবিআই অফিসাররা।

আরও পড়ুন:‌ কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুলে উঠল র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ারে নবম শ্রেণির ছাত্রকে অত্যাচার

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ সিবিআই সূত্রে খবর, টাকা দিয়ে পছন্দের জায়গায় পোস্টিং নিয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাই বিভিন্ন জেলার ৩৪৪ জন শিক্ষকের তালিকা তৈরি করে জেলাগুলির ডিআই অফিসে পাঠানো হয় নোটিশ। সেই তালিকা অনুযায়ী ৩৪৪ জনকেই নিজাম প্যালেসে তলব করে আজ থেকে শুরু করা হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ। এমনকী জেলার স্কুলশিক্ষা বিভাগের অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন সিবিআই তদন্তকারীরা। সকলের বয়ান রেকর্ড করা হবে। নিজেদের পছন্দের জেলায় বদলি বা পোস্টিং নেওয়ার জন্য নিয়ম বহির্ভূতভাবে অর্থের বিনিময়ে তা করা হয়েছে। শিক্ষা পর্যদের একাংশ এই কাজের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ। সেটা খতিয়ে দেখতেই এই তদন্ত।