শৌচালয় নির্মাণে পিছিয়ে বাংলা, উজ্জ্বল ব্যতিক্রম পূর্ব মেদিনীপুর

স্বচ্ছ ভারত মিশন-এর প্রকল্পে ফের মুখ পুড়লো বাংলার। পঞ্চায়েত দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ৪০,৬০০টি গ্রামের মধ্যে ‘ওডিএফ-প্লাস’ তকমা পেয়েছে ১৮,১২৯ টি গ্রাম। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা, একশো দিনের কাজের কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বর্তমান সময়ে বন্ধ থাকলেও স্বচ্ছ ভারত মিশন সহ বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু রয়েছে। এই প্রকল্পের অর্থের অভাবও নেই। ফলে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা মত কাজ পরিচালিত করলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরেও বাংলার গ্রামীণ ক্ষেত্রে প্রকল্পগুলির এই ব্যর্থতা চোখে পড়েছে। চলতি আর্থিক বছরে স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৭১৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে শুরু হয় স্বচ্ছ ভারত মিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। এটি চলবে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ পর্যন্ত।

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ঘরে ঘরে জল সংযোগের মত প্রত্যেক বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কাজে বেশ কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। বিপুল বরাদ্দের এই প্রকল্পে অগ্রগতির মাঝে কিছুটা হলেও ফিকে বাংলার পরিসংখ্যান। এর ফলে গ্রামীণ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগও হাতছাড়া হয়েছে অনেক দরিদ্র গ্রামবাসীর। প্রসঙ্গত, জলশক্তি মন্ত্রক বাংলার রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ঘরে ঘরে শৌচালয় নির্মাণ এবং কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকাঠামো তৈরির কাজে এই রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সেরার তালিকায় স্থান পেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা প্রকাশিত এই তালিকায় বাংলার আর কোনও জেলার নাম নেই। পূর্ব মেদিনীপুরে ২৯৮৮টি গ্রামের মধ্যে ২৯২৯ গ্রামই ‘ওডিএফ-প্লাস’ স্বীকৃতি পেয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে ২০১৯ সালের ২ অক্টোবরের মধ্যে গোটা দেশের গ্রামীণ গৃহস্থালিগুলিতে শৌচালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এর সঙ্গে স্থির হয়, কঠিন এবং তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হবে গ্রামে গ্রামে। এরপর শুরু হয় প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ। প্রশাসনিক সূত্রে একেই বলা হচ্ছে ‘ওডিএফ-প্লাস’। কোনও গ্রামে এই দুই ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অন্তত ৮০ শতাংশ স্বচ্ছতা থাকলে সেই গ্রামকে ‘মডেল গ্রাম’ হিবেসে ঘোষণা করছে কেন্দ্র। এই রাজ্যে এমন মডেল গ্রামের সংখ্যা মাত্র ৪৫টি, যার ফলে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়ই। সমস্ত জেলার প্রশাসকদের সতর্ক করে বার্তা দিয়েছে নবান্ন। প্রশাসনিক বৈঠকে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসককে কাজের গতি বাড়ানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।