টাকা তুলত পুলিশ, সব জানতেন রথীন ঘোষ, বলছেন বিস্ফোরণ বিধ্বস্ত মোজপোলের বাসিন্দারা

রবিবার সকালে দত্তপুকুর থানা এলাকার নীলগঞ্জের মোজপোলে বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে চলে গিয়ে বহু প্রাণ। ওই ঘটনায় পুলিশ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, মাসে ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে বেআইনি ওই কারখানা চলতে দিত পুলিশ। বাজি কারখানা যার বাড়িতে চলত সেই শেখ সামসুল তৃণমূলকর্মী। তাঁর বাড়িতে যে বাজি কারখানা চলছে তা জানতেন তৃণমূল নেতারাও। এমনকী রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষও জানতেন সেকথা।

রবিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিট নাগাদ বিস্ফোরণ হয় মোজপোলে বেআইনি বাজি কারখানায়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ধ্বংসস্তুপে পরিরণ হয়েছে একটি বাড়ি। আসেপাশের বাড়িতে ধরেছে ফাটল, উড়ে গিয়েছে জানলার কাচ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দত্তপুকুর থানার আইসি মাসে ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে ওই বাজি কারখানা চলতে দিতেন। ডাকমাস্টার মাসে মাসে এসে নগদে সেই টাকা নিয়ে যেত। স্থানীদের আরও দাবি, অভিযুক্ত শেখ সামসুলকে বাড়িতে বাজি কারখানা না চালানোর জন্য হাত জোড় করে অনুরোধ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেকথা কানে তোলেনি অভিযুক্ত। এর পর স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানান স্থানীয়রা। অভিযোগ, বাজি কারখানার বিরোধিতা করলে রাতে পুলিশ দিয়ে গারদে ভরে দেওয়ার হুমকি দিতেন তৃণমূল নেতারা।

স্থানীয়দের দাবি, এখানে যে বাজি কারখানা চলছে তা তৃণমূলের ওপর থেকে নীচ সবাই জানত। এমনকী মন্ত্রী রথীন ঘোষও সেকথা জানত। বেআইনি বাজি কারখানা চালানোয় পৃষ্ঠপোষকতা ছিল তাঁরও।

জবাবে রথীনবাবু সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘ওখানে ISF বেআইনি বাজি কারখানা চালাচ্ছিল। ব্যাপারটা পুলিশের দেখার কথা। আমাদের তো দেখার কথা না। ওখানে কী ভাবে বেআইনি বাজি কারখানা চলছিল পুলিশ বলতে পারবে। ’

রবিবার সকালে বিস্ফোরণের পর সাংবাদিকরা গিয়ে দেখেন, যেখানে সেখানে ছড়িয়ে রয়েছে মৃতদেহ ও মানুষের দেহাংশ। এমনকী বিস্ফোরণের তীব্রতায় একটি দেহ পাশে একটি ঘরের টালির চালার বাঁশের কাঠামোর ওপরে গিয়ে পড়েছে। যদিও বিস্ফোরণের তীব্রতায় আগেই উড়ে গিয়েছে ঘরটি চালার সমস্ত টালি। সাংবাদিকদের দেখে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি বিস্ফোরণে ১৫ – ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ১২ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। আহত বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩টি শিশু রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, বেলা ১২টা পর্যন্ত ৮টি দেহ উদ্ধার হয়েছে।