যাদবপুরের র্যাগিং রোগ বেশ পুরানো। যত দিন যাচ্ছে ততই যেন সেই রোগের নানা দিক ক্রমেই সামনে আসছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার রেশ এখনও ফুরোয়নি। জোর কদমে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। তার মধ্য়েই সামনে আসছে যাদবপুরের বিগতদিনের একাধিক ঘটনার কথা। বলা হচ্ছে নবীন বরণেও এই ধরনের র্যাগিং করা হত।
গত বছরের শেষাশেষি যাদবপুরের মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিপার্টমেন্টাল ফ্রেশার্স ওয়েলকাম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। আর ক্যাম্পাসের একটি অডিটোরিয়ামে সেই অনুষ্ঠান হয়েছিল। আর সেখানেই কার্যত বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল এখান থেকেই শুরু হয়ে গেল র্যাগিং এর প্রথম ধাপ। কীরকম ছিল ব্যাপারটি?
সেই সময় এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ জমা পড়েছিল। তবে সরাসরি নাম দিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। সেই সংক্রান্ত কিছু ফুটেজও জমা পড়ে। সেখানে বলা হয়েছিল, সিনিয়র দাদারা সেই সময় জুনিয়রদের যৌন দৃশ্য়ে অভিনয় করতে বলেছিল। এনিয়ে যথেষ্ট ভয়ে ভয়ে ছিলেন জুনিয়ররা। কিন্তু দাদাদের দাপটে সেসব নিয়ে মুখ খোলার মতো সাহস ছিল না জুনিয়রদের।
এদিকে ফের সেই ঘটনা সামনে আসতে শুরু করেছে। ফ্রেশার্স ওয়েলকামের নাম করে র্যাগিং হয় কিনা সেব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। প্রয়োজনে সেই নবীন বরণের অনুষ্ঠানের উপর নজর রাখা হবে।
তবে এই নবীন বরণ অনুষ্ঠানে মূলত সিনিয়ররা জুনিয়রদের বরণ করে নেন। এটা অত্যন্ত সুন্দর একটি অনুষ্ঠান। বহু কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অনুষ্ঠান হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানের আড়ালে র্যাগিংয়ের বিভৎসতা দাঁত মুখ খিঁচিয়ে থাকে এটা ভাবতে পারছেন না অনেকেরই।
এদিকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবার এই নবীন বরণ অনুষ্ঠানে লাগাম টানতে চাইছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মূলত এর আড়ালে যাতে র্যাগিং করার সুুযোগ না মেলে সেটা দেখা হচ্ছে। মোটের উপর যতক্ষণ অনুষ্ঠান চলবে সেখানে যেন একজন বিভাগীয় শিক্ষক উপস্থিত থাকেন সেব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এখানে প্রশ্ন উঠছে আদৌ সেই শিক্ষকের কথা কি শুনবেন সিনিয়রা?
কারণ হস্টেলে র্যাগিং হয় এটা জেনেও শিক্ষক, কিংবা হস্টেল কর্তৃপক্ষ আতঙ্কে মুখ খুলতে পারতেন না। সেক্ষেত্রে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেও সুরাহা কতটা করা যাবে তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।