বর্গা জমির চরিত্রে বদল প্রয়োজন, সম্মতি জানালেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য

অবশেষে অব্যবহৃত বর্গা জমির কৃষি চরিত্র বদলের দিকটি গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই প্রসঙ্গে ভূমি ও ভূমি সংস্কার প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য শুক্রবার বক্তব্য রাখেন। মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে বর্গা জমির চরিত্র বদলের প্রয়োজনীয়তা দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি সরকার বিবেচনা করে দেখবে।’ বিধানসভায় গত সপ্তাহে ১০৩ বছরের পুরনো চরের জমি সংক্রান্ত একটি আইন বাতিলের জন্য বিল পাস হয়েছে। এই প্রসঙ্গেই এসেছে বর্গা জমির আলোচনাটি। 

কান্দি বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব রায় বর্গা জমি সংক্রান্ত বিষয়টি উত্থাপন করেন বিধানসভায়। তিনি বলেন বহু ক্ষেত্রে বছরের পর বছর বর্গা হওয়া জমি চাষ করা যাচ্ছে না চরিত্রগত কারণে। সেই জমির মালিক বাড়ি তৈরি বা অন্য কোনও বাণিজ্যিক কাজে জমি ব্যবহার করতে পারছেন না। বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করা হয়। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, এই বিষয়টি বিবেচনার যৌক্তিকতা আছে। বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে ভূমি দপ্তরের দিকে বল গড়িয়েছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

কান্দির বিধায়ক আরও বলেন, ‘মুর্শিদাবাদ মালদহ সহ কয়েকটি জেলায় গঙ্গা ও অন্যান্য নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে পাড়ের ভাঙনে বহু জমি, স্কুল, বাড়ি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মস্থান তলিয়ে গেছে।’ অপূর্ব রায়ের প্রশ্ন, ‘এই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিগুলিকে কি সরকার সরকারিভাবে জমিহারা’র স্বীকৃতি দেবে?’ মুর্শিদাবাদের বিধায়ক হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই গঙ্গা ভাঙনের প্রসঙ্গটি বারবার উত্থাপন করেন তিনি। এক পাড় ভাঙলে অন্য পাড়ে পলি জমে। সেখানেও জমিহারা মানুষের পুনর্বাসনের কথা ভাবা যেতে পারে মতামত দিয়েছেন কান্দির বিধায়ক। তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বা রাজ্য সরকারের অন্যান্য কোনও মন্ত্রী মন্তব্য করেননি।

 ১০৩ বছর পুরনো চরের জমি সংক্রান্ত আইন অনুসারে, নদী বা সমুদ্রের ধারে জেগে ওঠা চরের জমি বিলিবন্টনের ভার ছিল জেলাশাসক বা তার প্রতিনিধিদের হাতে। তবে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়পর্বে নতুন করে তৈরি করা আইনে চরের জমি সরাসরি খাস জমি হিসাবে বিবেচিত হয়ে এসেছে।

অন্যদিকে, নদী চরের প্রসঙ্গ আসতেই স্বাভাবিকভাবে বাংলায় নদী চরের বালি চুরির প্রসঙ্গ এসে পড়ে। বালি চুরি প্রসঙ্গে প্রশাসনের মদতে মাফিয়া দৌরাত্মের অভিযোগে সরব হন বিজেপি’র দুই বিধায়ক নরহরি মাহাতো এবং বিশ্বনাথ কারক। এই দিনের আলোচনায় অবশ্য বালি চুরি প্রসঙ্গে বিশেষ আমল দিতে চাননি মন্ত্রী। আগামীতে বর্গা জমির চরিত্র কী ভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব হয়, তা খতিয়ে দেখার ভার এখন ভূমি দপ্তরের হাতেই।