Duttapukur Blast Latest Update: ফিরে আয় বাবা…. দত্তপুকুরে দলা পাকিয়ে পড়েছিল দুই ছেলের দেহ, এখনও গোঙাচ্ছেন মা

দত্তপুকুরের বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৯ জনের। মৃতদের মধ্যে আছে দুই ভাই – ছোটন শেখ (১৬ ) ও আমজাদ শেখও। দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে কোল ফাঁকা হয়ে গিয়েছে আনকরি বিবির। দত্তপুকুরের বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজনের দেহ শনাক্ত করতে পেরেছে পুলিশ। এদের মধ্যে চার জনই এক পরিবারের সদস্য। মুর্শিদাবাদের সুতি থানা এলাকার চাদরা গ্রামে বাসিন্দা ছিলেন তারা। তাদেরই মধ্যে রয়েছে ছোটন ও আমজাদ। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আজাদের দেহের নিম্নাংশ উড়ে গিয়েছে। তাকে আনকরি বিবি চিনতে পেরেছিলেন সবুজ রঙের টি শার্ট দেখে। এদিকে খাকি হাফপ্যান্ট দেখে ছোট ছেলেকে চিনতে পারেন তিনি। দুই ছেলের দেহ দলা পাকিয়ে পড়েছিল বিস্ফোরণস্থলে। সেই দৃশ্য যেন আনকরি বিবির চোখের সামনে এখনও ভাসছে। থেকে থেকেই অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন তিনি। গোঙানির সুরে বে যাচ্ছেন, ‘ফিয়ে আয় বাবা…’

জানা গিয়েছে, কাজের খোঁজে কয়েকদিন আগেই চাদরা গ্রাম থেকে ১০ জন বারাসতে গিয়েছিল। বাড়িতে তারা বলে গিয়েছিল, রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে যাচ্ছে। যদিও মোটা টাকা মজুরির লোভে তারা গিয়েছিল দত্তপুকুরের বাজি কারখানায় কাজ করতে। স্থানীয় দুই এজেন্টের মারফত সেই কাজে যোগ দিয়েছিল তারা। এই আবহে ছোটন ও আমজাদের মা আনকরি বিবির অভিযোগ, এই ঘটনার মূল পাণ্ডা মোহন শেখ নামে এক তৃণমূল নেতা। সেই নেতার গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন তিনি। আনকরি বিবির অভিযোগ, ফোনে দুই ছেলেকে বিশেষ কথা বলতে দিত না মোহন শেখ। মজুরি বাবদও বেশি টাকা দেওয়া হয়নি। পুত্রশোকে বিহ্বল মায়ের দাবি, সেই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করলেই প্রকাশ্যে আসবে সব সত্যি।

এদিকে দত্তপুকুর বিস্ফোরণের ২৭ ঘণ্টা পর গতকাল বেআইনি বাজি কারখানায় যায় এনআইএ-র একটি গোয়েন্দা দল। সোমবার ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তাঁরা। আর কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। এই ঘটনার পর চারজনের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে তিনজন মৃত হলেও একজন আইএসএফের ব্লক পর্যায়ের নেতা বলে দাবি পুলিশের। এদিকে এগরার পর মাস কয়েক ঘুরতে না ঘুরতে রাজ্যে আবার বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে এই বিস্ফোরণের প্রেক্ষিতে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সব জেনে শুনেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা। এই আবহে নীলগঞ্জ ফাঁড়ির ওসি হিমাদ্রি রায়কে সাসপেন্ড করা হয়েছে। দত্তপুকুরের ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গভীর রাতে নীলগঞ্জ এলাকা থেকে বাজি কারখানা মালিক কেরামত আলির সহযোগী বলে পরিচিত শফিক আলি ওরফে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।