‘দেদার ছাপ্পার পরেও প্রাণভয়ে ‘ভোট শান্তিপূর্ণ’ লিখতে বাধ্য হয়েছিলাম’

রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছাপ্পা ও বুথদখলের অভিযোগ কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে পাহাড় প্রমাণ মামলা। শুক্রবার তারই একটি মামলায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে হলফানাম জমা দিয়ে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করলেন এক প্রিসাইডিং অফিসার। আদালতকে তিনি জানিয়েছেন, দেদার ছাপ্পা হলেও প্রাণভয়ে ‘শান্তিপূর্ণ ভোট’ লিখতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। প্রিসাইডিং অফিসারের এই স্বীকারোক্তির পর ওই বুথে পুনর্নির্বাচন করা নিয়ে কমিশনের অবস্থান কী তা জানতে চেয়েছে আদালত।

ভোট গ্রহণ ও গণনার দিন ব্যাপক কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা ২ নম্বর ব্লকের কাশীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি বুথের সিপিআইএম প্রার্থী নাসিমা বেগম। সেই মামলায় ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসারের হলফনামা তলব করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ওই বুথে প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন পেশায় শিক্ষক সুমিত পাণ্ডে। তিনি আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, ভোট গ্রহণের দিন বেলা ১২টা নাগাদ বুথে একদল দুষ্কৃতী বুথে ঢুকে পড়ে। তাঁদের মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। বুথে ঢুকেই ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে দেদার ছাপ্পা দিতে শুরু করে তারা। সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে দেয়। বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বুথ দখল করে রেখেছিল তারা। দুষ্কৃতীরা আমার ও পোলিং অফিসারদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছিল। তাই আমরা পুলিশকে ঘটনার কথা জানাতে পারিনি। বিকেল ৫টায় ভোট শেষ হলে আমাকে ‘ভোট শান্তিপূর্ণ’ বলে লিখতে বাধ্য করে।

এর পর বিচারপতি প্রশ্ন করেন, বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টা বুথ দখল হয়ে থাকল, পুলিশ কী করছিল? ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই তো বুথে বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তারা কী করছিল? এই হলফনামার ভিত্তিতে তারা ওই বুথে আবার নির্বাচন করাতে চায় কি না তা ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। ১২ সেপ্টেম্বর মামলাটি ফের শুনবেন বিচারপতি সিনহা।