বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা প্রাথমিকের ২ শিক্ষককে চূড়ান্ত বরখাস্ত ও একজনকে অব্যাহতি

যশোরের চৌগাছা উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন সহকারী শিক্ষককে চাকরি থেকে চূড়ান্ত বরখাস্ত ও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের আগস্টের ১ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এর মধ্যে দুজন প্রবাসে জীবনযাপন করছেন। তারা হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নিশাত মুনাওয়ারা ও চীনে পড়াশোনা করা শারমিন সুলতানা জিনিয়া।

চৌগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ আগস্ট গুরুদণ্ড হিসেবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় বড়খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিশাত মুনাওয়ারাকে। যা গত বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সকালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে পৌঁছায়। তিনি ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর চিকিৎসা ছুটির আবেদন করে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং সেখানে বসবাস করছেন।

এ বিষয়ে চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ১৬ মার্চ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। সব প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ৩০ আগস্ট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তাকে গুরুদণ্ড হিসেবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন।

২ আগস্ট চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় কংশারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারহানা সাত্তারকে। তিনি ২০২২ সালে যশোর পিটিআইয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হন। একই বছরের ১২ থেকে ২২ মে পর্যন্ত পিটিআই প্রশিক্ষণে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন। পিটিআই সুপার তার ভর্তি বাতিল করলেও তিনি বিদ্যালয়ে যোগ দেননি বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও প্রকার যোগাযোগ করেননি।

চলতি বছরের ৪ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়। এরপর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২ আগস্ট তাকে চাকরি থেকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়।

এ ছাড়া উপজেলার মাজালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিন সুলতানা জিনিয়া চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে যোগদান করে একমাস শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই চীনে লেখাপড়া করতে চলে যান। ২৭ মার্চ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই শিক্ষক চীন থেকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং চাকরি থেকে ইস্তফার আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সুপারিশে গত ১ আগস্ট তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করেন যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম।

এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই তিন শিক্ষক কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো এবং তাদের চাকরি থেকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও কারণ দর্শানো নোটিশ করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দুই জনকে গুরুদণ্ড হিসেবে চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং একজনের আবেদনের ভিত্তিতে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।