Teachers’ Day 2023: শিক্ষক দিবসের চেহারা কী বদলায় বছর বছর? আলোচনায় দুই তরুণ শিক্ষক-শিক্ষিকা

শিক্ষক দিবস মানেই পড়ুয়া ও শিক্ষকদের এক অন্যরকম সমীকরণ। এই একটি দিন অন্য সুরে কাটাতে ভালোবাসে দুই পক্ষই। কিন্তু দিন বদলেছে বেশ দ্রুত গতিতে। কিছু বছর আগে যেভাবে পালিত হত শিক্ষক দিবস, এখন তার থেকে অনেকটাই আলাদা। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান যত এগিয়েছে, বদলে দিনযাপনের ধরন। ছোট থেকে বড়, সব বয়সের মানুষই সেই প্রভাবের বশে। সেই প্রভাব কী শিক্ষক দিবসেও পড়েছে? এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে সেই নিয়েই কথা বললেন দুই তরুণ শিক্ষক-শিক্ষিকা। দশ থেকে পনেরো বছর আগে তাঁরা ছিলেন পড়ুয়াদের দলেই। কীভাবে বদলেছে টিচার্স ডে দিনটার ছবি? 

পাঠভবন কলকাতা স্কুলের বাংলার শিক্ষক সপ্তর্ষি রায় বললেন, ‘এখন সরকার থেকে পড়ুয়া সবাই শিক্ষক দিবসকে ঘিরে ভীষণ মেতে ওঠেন। আমাদের ছেলেবেলায় এই দিনকে ঘিরে আমরা এতটা মেতে উঠতাম তা নয়। তবে শিক্ষকদের প্রতি সম্মান আর মূল্যবোধ এখনের তুলনায় বেশি ছিল। যেমন আমি আমার স্কুলে সেভাবে শিক্ষক দিবস পালন করতে দেখিনি। কিন্তু দিনটি টিচার্স ডে বলেই আমরা হাতে কার্ড তৈরি করে নিয়ে গিয়েছি। বাগান থেকে ফুল তুলে নিয়ে গিয়েছি।’

শিক্ষক দিবস মানেই এখন গিফটস, স্কুল ঘর সাজানো, অনুষ্ঠানের আয়োজন। এই ছবিগুলি কী কিছুটা আলাদা ছিল এক বা দুই দশক আগে? সপ্তর্ষি বললেন, ‘এখন যেমন উপহার, অনুষ্ঠানের আড়ম্বর, সেটা তখন ছিল না। কিন্তু শ্রদ্ধা, ভক্তি অমলিন ছিল। প্রজন্ম অনুযায়ী, এখন আড়ম্বরের পাশাপাশি অসম্মানটাও কিন্তু বেশি। আমরা কিন্তু সবার থেকে শিখি। বাবা-মা, প্রত্যেকটা সম্পর্ক ও প্রত্যেকটা ঘটনা থেকে আমরা শিখি। ফলে এরা সবাই আমার শিক্ষক। কিন্তু এই ব্যক্তিগত আত্মিক সম্মানটা এই প্রজন্মের মধ্যে কম দেখতে পাই। মূল কথা এই, সবার সঙ্গে যে একইরকম ব্যবহার করা যায় না সেটা বুঝতে হবে।’

অন্যদিকে নব নালন্দা স্কুলের বায়োলজির শিক্ষিকা জানালেন তাঁর হাফ স্কুলের স্মৃতি। ‘একটু বড়দের উপর ছিল সেই দায়িত্ব। ক্লাস নাইন, টেন, ইলেভেন, টুয়েলভে ছোটদের ক্লাসে গিয়ে পড়াতে হত। ওটা অন্য এক অনুভূতি। এছাড়াও, স্যর, ম্যামরা চকোলেট দিতেন এই দিন।’ ঘটনাচক্রে নব নালন্দাতেই পড়াশোনা করেছেন দিয়াশা। এখন সেখানেই শিক্ষিকার ভূমিকায়।

এই দিনের উদযাপন এখন কীভাবে দেখেন? ‘এখন শিক্ষক দিবসে ছাত্রছাত্রীরা অনুষ্ঠান করে। নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে হইহই করে দিনটির উদযাপন হয়। আগে কেক কাটার চল খুব একটা ছিল না। এখন ওরা কেক এনে ওদের মতো করে পুরোটা উদযাপনের ব্যবস্থা করে। সেটা বেশ ভালোই লাগে।’ যত দিন যাবে, উদযাপনের চেহারা পাল্টে যাবে এটাই স্বাভাবিক হয়তো। কিন্তু ছাত্র শিক্ষকের সম্পর্কটা একইরকম সুন্দর থাকা কাম্য বলেই মনে করছেন তরুণ শিক্ষক-শিক্ষিকা। সেখানে যেন কোনওভাবে অসম্মান বা অবিশ্বাস ঢুকে না পড়ে, এটাই কামনা তাদের।