রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে বিশবাঁও জলে সার্চ কমিটি, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ

অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় গিয়েছে যে এবার রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসতে চলেছেন তৃণমূলপন্থী উপাচার্য এবং শিক্ষাবিদরা। বুধবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে তো আগেই ধর্নায় বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সংঘাতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ এবং তার জন্য সার্চ কমিটি তৈরি সব কার্যত বিশ বাঁও জলে।

রাজ্যের ৩১ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে জন্য ৩১টি সার্চ কমিটি তৈরি করতে হবে। কিন্তু সেই কমিটি কবে তৈরি হবে কেউ জানে না। শিক্ষা দফতরের অভিযোগ, রাজ্যপাল সার্চ কমিটিতে নিজের প্রতিনিধি দিচ্ছেন না। ফলে গঠন করতে পারা যাচ্ছে না কমিটি।

আবার আইনি জটে আটকে সার্চ কমিটির অর্ডিন্যান্স। রাজ্যে অধীনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি উপাচার্য নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকার একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। তিনজনের বদলে পাঁচজনের সার্চ কমিটির গঠনের লক্ষ্যেই এই অর্ডিন্যান্স। গত ১৫ মে এই অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। এই অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী কমিটিতে থাকবেন, রাজ্যপালের মনোনীত প্রতিনিধি, উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি, রাজ্যের মনোনীত প্রতিনিধি ও মুখ্যমন্ত্রীর মনোনীত প্রতিনিধি। এই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোনীত প্রতিনিধির কোনও স্থান নেই। এই অর্ডিন্যান্সকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই হাইকোর্টে মামলা হয়। বিষয়টি বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন।

(পড়তে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী বসার আগেই শুক্রবার রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসবেন তৃণমূলপন্থী উপাচার্যরা)

আবার উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার দুমাস আগে থেকে সার্চ কমিটি তৈরি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে কোনও অচলাবস্থা তৈরি না হয়।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ প্রসঙ্গে সাংবদমাধ্যমকে জানিয়েছেন,’আমরা ফাইল পাঠাচ্ছি, রাজ্যপাল গ্রাহ্য করছেন না। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটিতে তাঁর কোনও প্রতিনিধি পাঠানো হোক। তিনি সে সবে তোয়াক্কা করছেন না। নিজের পেটোয়া উপাচার্যদের দায়িত্বে রাখছেন।’ রাজভবনের আবার অভিযোগ, রাজ্যের সদিচ্ছার কারণে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের পথে এগুনো সম্ভব হচ্ছে না। রাজ্য-রাজ্যপাল দড়ি টানাটানিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্থায়ী উপাচার্য কবে পাবে কেউ জানে না। অধ্যাপকদের একাংশ মনে করছেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে রাজ্যের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ‘মৃত্যু’ আর বেশি দূরে নেই। এমনটা চলতে থাকলে পড়ুয়ারা সরকারি প্রতিষ্ঠান ছেড়ে উচ্চশিক্ষার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দিকে ঝুঁকবেন।