খাস কলকাতায় দৃষ্টিহীনদের হোমে ২ নাবালিকাকে ১০ বছর ধরে ধর্ষণ, গ্রেফতার ৩

দৃষ্টিহীনদের হোমে দুই নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসতেই তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতেই এই ঘটনায় হোমের মালিক, প্রিন্সিপাল এবং সেক্রেটারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেফ হোমের ভিতরে ওই দুই নাবালিকাকে ১০ বছর ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। হরিদেবপুরে অবস্থিত ওই হোমে মূলত দৃষ্টিহীনদেরকেই রাখা হত। কিন্তু, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই নাবালিকাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ১০ টাকার লোভ দেখিয়ে নাবালিকাকে টানা একমাস ধরে ধর্ষণ দার্জিলিংয়ের বৃদ্ধের

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত এই হোমে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানেই তাদের শিক্ষাদানেরও ব্যবস্থা রয়েছে। এই হোমে দুজন নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং একজন নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই হোমটি চালিয়ে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। এরপর শিশু সুরক্ষা কমিশন পুলিশকে জানালে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সেখানে হানা দিয়ে হোমের মালিক সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। এর সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত আছে বলে মনে করছে পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় ধৃত প্রিন্সিপাল হলেন মহিলা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিষয়টি জানার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেননি, চুপ করে ছিলেন। অন্যদিকে, সেক্রেটারি নাম হল জীবেশ দত্ত। ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার রাতে ওই হোমে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখানে রাঁধুনি সহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই ওই ৩ জনকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনার পরেই হোমের ৪০ জন নাবালিকাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে এই হোমের একটি ঘরে থাকতো ৩২ জন নাবালিকা এবং অন্য থাকতো ৮ জন কিশোরী। এই ঘরের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তিনিও দৃষ্টিহীন। তিনি জানান, মেয়েদের রাত ৯ টার মধ্যে খাবার খাইয়ে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হতো এবং বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হতো। এর পাশাপাশি এই হোমে ৩৮ জন নাবালক থাকতো। তারা মূলত ঝাড়খণ্ড থেকে এসেছিল। তবে হোমের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ ওঠার পরে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন অন্যান্য কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই এই হোমে সকলেই হেসে খেলে থাকতো। কিন্তু এরকম যে হতে পারে তা তাঁরা ভাবতেই পারছেন না। আরও অভিযোগ, এই হোমে শিশুদের অবহেলার চোখে দেখা হতো। কিছুদিন আগে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক শিশুর। এছাড়াও, তিন তলা থেকে এক শিশু পড়ে আহত হয়েছিল। এই অবস্থায় হোমে নজরদারি আদৌও ছিল কিনা তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।