World Suicide Prevention Day 2023: পুরুষদের আত্মহত্যার পিছনে কি শুধুই বেকারত্ব? আলোচনায় মনোবিদ

তরুণ ও কর্মরত পুরুষদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। অন্তত এমনটাই বলছে ২০২১ সালের পরিসংখ্যান। ওই বছর ভারতে মোট আত্মহননকারীর ৬২ শতাংশের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ঠিক কোন কোন কারণে বাড়ে এই প্রবণতা? এই নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে কথা বললেন ইন্ডিয়ান সাইকোঅ্যানালিটিক্যাল সোসাইটির সেক্রেটারি ও বিশিষ্ট মনোবিদ ভারতী জৈন।

বেকারত্ব ও কর্মক্ষেত্রের চাপ আত্মহননের কারণ হিসেবে অনেকটাই দায়ী বলে জানান তিনি। ‘দীর্ঘদিন মনমতো কাজ না পাওয়া থেকে একটা হতাশা ও অবসাদের জন্ম হয়। এই অবসাদ আত্মহননের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে কর্মরতদের পরিস্থিতি আরেকরকম। কাজের জায়গায় উর্ধ্বতনের রোজকার চাপ থাকে‌‌। ব্যক্তিগত জীবন ও কর্মজীবনে ভারসাম্য রাখতে হয়‌। মনের উপর প্রভাব ফেলতে থাকে এগুলো। পরিবারের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে নানা চাপ সহ্য করতে হয়। চাপ সহ্য করতে না পারলে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেন অনেকে।’

তবে সবার ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে তাও নয়। সেই প্রসঙ্গে মনোবিদ ভারতী জানাচ্ছেন বাড়ির বড় সদস্যদের কথা। ‘বাড়ির বড় কাউকে ছোট থেকেই চাপ সামলাতে দেখে অনেকে। সেই থেকে নিজেরও একটা অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে এমন প্রবণতা আসে না‌। কিন্তু অনেকেই অতিরিক্ত চাপের সঙ্গে যুঝতে পারেন না। কেউ কেউ কথা বলা বন্ধ করে দেন। নিজের সমস্যা কারও সঙ্গে ভাগ করে নেন না। গুটিয়ে যান। এর থেকে আসে অবসাদ। তার পর আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত।’

প্রেম ও যৌনতার ভূমিকাও এই বিষয়ে স্পষ্ট করলেন ভারতী জৈন। ‘সঙ্গীর সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক থাকলে প্রেম ও যৌনতা মানসিক ও শারীরিক দিক থেকে অনেকটা চাপ কমায়। কিন্তু সেই চাপ কমানোর উপায় না থাকলেও বাড়ে মনখারাপ, অবসাদ‌।’

আত্মহননের মানসিকতা এলে কোন কোন লক্ষণ দেখা দিতে থাকে? ভারতীর কথায়, ‘অবসাদের বড় লক্ষণ কম কথা বলা। কাউকে মনের কথা না জানানো। এমনকী কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেও ‘ঠিক আছে’, ‘চলছে’— এমন ছোটখাটো উত্তর দিয়ে কথা শেষ করার প্রবণতা। এছাড়াও কোনও কাজ করতে না চাওয়া বা করলেও ঠিকমতো না করেই উঠে পড়ার লক্ষণ দেখা দেয়। আরেকটা বড় ব্যাপার, খাওয়া ও ঘুমের বদল। এই দুটো হয় অনেক বেড়ে যায়, নয় অনেকটা কমে যায়। এমনকী জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। এই লক্ষণগুলি দেখা গেলেই সতর্ক হওয়া জরুরি।’

নিজেকে নিজেই এই পরিস্থিতি থেকে বার করতে চাইলে কী করণীয়? ভারতী প্রথমেই জানালেন কথা বলার ব্যাপারটা। ‘পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা বাড়াতে হবে। পরিবার না হলে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। অফিসের বিশ্বস্ত সহকর্মীর সঙ্গেও মনের কথা ভাগ করে নেওয়া ভালো। এই সময় ভুক্তভোগীদের বেশি করে মনে হয়, কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। তবুও কথা বলাটা জরুরি।’

এর পাশাপাশি কাজের গুরুত্বের কথাও বললেন মনোবিদ ভারতী জৈন। ‘নিজের ভালো লাগা বা শখের কাজে বেশি সময় কাটানো যেতে পারে। শুধু কোনও একটা বিষয় নিয়ে ভাবতে থাকলে সমস্যা কমবে না‌। বরং কিছুক্ষণ হাঁটা, পোষ্যের সঙ্গে খেলাও একটা কাজ। এতে আত্মহননের চিন্তা‌ অনেকটা কমে। বেঁচে থাকার ইচ্ছেও ধীরে ধীরে ফিরে আসে। এছাড়াও, পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নেওয়াও জরুরি। তিনি সমস্যার মূল কারণটা খুঁজে পেতে অনেকটাই সাহায্য করেন।’

সুইসাইড প্রিভেনশনস ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন: 8047096367

লাইফলাইন ফাউন্ডেশন: 9088030303

আইকল: 9152987821

ওয়ানলাইফ ফাউন্ডেশন: 7893078930

স্যামারিটানস: 8422984528

শুশ্রূষা কাউন্সেলিং: 9422627571

মন টকস: 8686139139

স্নেহ ফাউন্ডেশন: +9144-24640050