কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের

উচ্চশিক্ষার সুযোগসহ চার দফা দাবি আদায় না হলে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস্) শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে সাধারণ ম্যাটস্ শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এই হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ম্যাটস শিক্ষার্থীরা বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩-১৯৭৮) উচ্চশিক্ষার কথা উল্লেখ থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরে তা কার্যকর হয়নি। ডিপ্লোমা মেডিক্যাল তথ্য (ডিএমএফ) কোর্স সম্পূর্ণ করা প্রায় ৩০ হাজার দক্ষ জনবল কর্মসংস্থানহীন, কিন্তু স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারের ৩ হাজার ৪০০টি পদ শূন্য। এতে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।

তারা বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ সই করা এক স্মারকে ম্যাটসের নতুন কোর্স কারিকুলাম দেওয়া হয়। কিন্তু এই কোর্স কারিকুলামের মাধ্যমে আমাদের বাস্তবিক প্রশিক্ষণ তথা ইন্টার্নশিপসহ চিকিৎসা শিক্ষার অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, যা আমাদের জাতীয় জীবনে দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে উঠতে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আগের লিখিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ‘মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে স্বতন্ত্র বোর্ড করার সিদ্ধান্ত থাকলেও গত ৭ আগস্ট সংবাদমাধ্যম সূত্রে আমরা লক্ষ্য করেছি ‘বাংলাদেশ অ্যালাইড হেলর শিক্ষাবোর্ড আইন-২০২৩’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটা আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংগঠিত হয়ে চার দফা দাবি জানিয়েছি।

তারা আরও বলেন, দাবি আদায়ে আমরা এর আগে ক্লাস বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট, সব সরকারি ম্যাটসের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলানো, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের সম্মুখে অবস্থান কর্মসূচি করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত দাবি আদায়ে কোনও কার্যকর তৎপরতা দেখা যায়নি। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্য আমাদের দাবি আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনও তৎপরতা দেখা না গেলে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।

তাদের দাবিগুলো হলো–

বঙ্গবন্ধু প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮) অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া; অনতিবিলম্বে চার বছরের অ্যাকাডেমিক কোর্স বহাল রেখে আগের মতো এক বছরের ইন্টার্নশিপসহ অসংগতিপূর্ণ কোর্স কারিকুলাম সংশোধন করা; এলাইড হেলথ শিক্ষা বোর্ড বাতিল করে ‘মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে বোর্ড গঠন করা এবং অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা (কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে পাস করা ডিএমএফদের পদ সৃষ্টি করে পদায়ন করা)।

সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন– সাধারণ ম্যাটস্ শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক মাহবুব তালুকদার অপ্প, মো. মুজাহিদুল, মো. হাসিবুল ইসলাম, প্রচার সমন্বয়ক মেহেদী হাসান প্রমুখ।