গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র জায়েদা খাতুন দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ উপলক্ষে শহরের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে অভিষেক অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এরপর নগর ভবনে যান মেয়র। তবে অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের কোনও বড় নেতাকে দেখা যায়নি।
অনুষ্ঠানে মেয়র জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। আমার আগেও আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছিলেন। এ জন্য আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদের শুভেচ্ছা জানাই। আমি নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা এবং আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি সুন্দর ও আধুনিক নগর উপহার দেবো। এ জন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই।’
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তিনি বলেন, ‘আপনারা মাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। মা-ও বলেছেন তার জীবনবাজি রেখে আপনাদের পাশে থাকবেন, সেবা দেবেন। আপনারা জানেন, নির্বাচনে প্রচারণার কাজে টঙ্গীতে গেলে তিনি বারবার বাধা ও হামলার শিকার হয়েছেন। তারপরও তিনি থেমে যাননি। কেউ শহরের ক্ষতি করবেন না। এ শহর রক্ষার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি, কষ্ট করেছি। আবারও প্রয়োজন হলে মায়ের সঙ্গে থেকে এ সিটির জন্য কাজ করবো।’
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম সফিউল আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মোজাম্মেল হক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব মো. আবদুল হান্নানসহ নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা।
এর আগে সকাল ৯টার পর থেকে গাড়িতে এমনকি পায়ে হেঁটে নবনির্বাচিত মেয়রের সমর্থকরা বাদ্য বাজিয়ে নেচেগেয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। একপর্যায়ে পুরো এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। আনন্দ মিছিলের কোলাহলে আশপাশ মুখর হয়ে ওঠে। অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সফিউল আজম ও নির্বাচিত কাউন্সিলররা নতুন মেয়রকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান।
এরপর মেয়র নগর ভবনে গিয়ে তার আসনে বসেন। এ সময় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম পাশে ছিলেন। আগের দিন রবিবার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তার দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জায়েদা খাতুন নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানের সঙ্গে লড়াই করে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে চমক সৃষ্টি করেন জায়েদা। ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পান তিনি।