অলাভজনক ১৯ রুটে ৪০টি বাস বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে রাজ্য

লাগাতার বেড়ে চলেছে জ্বালানির দাম। তারওপর রয়েছে কর্মীর ঘাটতি এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। তাছাড়া, কয়েক বছর ধরে ভাড়া না বাড়ায় আয়ও কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। এই সবের কারণে ধুঁকছে সরকারি বাস পরিবহণ ব্যবস্থা। লাভ না থাকায় অনেক রুটেই সরকারি বাস কমে যাচ্ছে। ফলে বসে যাচ্ছে বহু বাস। এই অবস্থায় বিভিন্ন রুটের সরকারি বাসগুলিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। ইতিমধ্যেই সেই কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। 

আরও পড়ুন: সরকারি বাস বেসরকারি মালিকদের দিতে চায় রাজ্য, ন্যূনতম ভাড়া বাড়ানোর শর্ত মালিকদের

পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ট্রাম কোম্পানি, সিএসটিসি এবং ডব্লুউবিটিসির ১৯ রুটের ৪০টি সরকারি বাসকে বেসরকারিকরণের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। তাতে বেশ কয়েকটি সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে। সব মিলিয়ে ৮ টি সংস্থা এগিয়ে এসেছে। প্রাথমিকভাবে ১৯ টি রুটের এই বাসগুলিকে বেসরকারীকরণ করতে চায়ছে রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে সাফল্য মিললে আগামী দিনে আরও বড় বেসরকারীকরণের পথে নামতে পারে রাজ্য পরিবহণ দফতর। তবে যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বেসরকারি সংস্থাগুলির ওপর বেশ কিছু কিছু শর্ত আরোপ করেছে পরিবহণ দফতর। তার মধ্যে রয়েছে, ৩০ দিনের মধ্যে অন্তত ২৬ দিন বাসগুলিকে রাস্তায় নামাতেই হবে। তার কম হলে প্রতিদিন বাসপিছু ৫০০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া বাসের যাবতীয় কর্মী অর্থাৎ চালক, কন্ডাক্টর এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ও তেলের ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই করতে হবে। 

এর পাশাপাশি সংস্থাগুলির তরফেও থাকছে কিছু শর্ত। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রুটগুলিতে সরকারের কোনও বাস চলবে না। এছাড়া বাসগুলি নিকটবর্তী সরকারি ডিপোতে  রাখতে হবে। অন্যদিকে, এই সরকারি বাস হস্তান্তরের আগে ৩০ হাজার টাকা লাইসেন্স ফি দিতে হবে সংস্থাকে। বাস পিছু রুটের ভিত্তিতে কত টাকা করে সরকারকে দিতে হবে তাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সরকারকে তুলে দিতে হবে বলে শর্তে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, অর্থের অভাবে কার্যত সরকারি বাস পরিবহণ ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। চলতি অর্থবছরে এখনও রক্ষণাবেক্ষণের খাতে অর্থ দফতরের কাছ থেকে টাকা না পাওয়ায় বহু বাস রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে রয়েছে। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে প্রায় ২৫০ টি বাস বিভিন্ন ডিপোতে পড়ে রয়েছে। তাছাড়া পর্যাপ্ত তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কারণে বাসগুলিকে সচল রাখতেই বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। তবে সে ক্ষেত্রে ভাড়া  অপরিবর্তীত রাখা হবে বলেই জানা যাচ্ছে।