লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ে রাজবাড়ীর দুই যুবকের মৃত্যু

লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ে মারা যাওয়া ছয় বাংলাদেশির মধ্যে দুজনের বাড়ি রাজবাড়ী জেলায়। জানা গেছে, লিবিয়ার ত্রিপোলি শহর থেকে ১৩৪০ কিলোমিটার দূরবর্তী শহর দারনায় রবিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘দানিয়েল’ আঘাত হানলে ছয় বাংলাদেশির মৃত্যু হয়।

রাজবাড়ীর মৃত দুজন হলেন– রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার যশাই ইউনিয়নের ধোপাকেল্লা গ্রামের দুলাল খার ছেলে সুজন খাঁ (২৩) এবং একই উপজেলার হাবাসপুর গ্রামের আরশেদ মণ্ডলের ছেলে শাহিন শেখ (৪০)।

সুজনের বড় ভাই জুবায়ের খান ফোনে বলেন, ‘আমরা চার ভাইবোন। সুজন আমার ছোট। ২০১৯ সালে সুজন লিবিয়াতে পাড়ি জমায়। অনেক ছোট বয়স থেকে সে প্রবাসে থাকে। তবে সংসারের খরচ সে চালাই। গতকাল হঠাৎ খবর পেলাম, সুজন লিবিয়াতে ঘূর্ণিঝড়ে মারা গেছে। তার মরদেহ কী অবস্থায় আছে আমরা জানি না। তবে আমার মামাতো ভাই লিবিয়াতে থাকে। তার মাধ্যমে একবার খবর পেয়েছি সুজনের লাশ দাফন হয়ে গেছে। আবার খবর পেয়েছি লাশ আছে। সঠিক কোনও তথ্য এখন পর্যন্ত পাইনি। সুজনের মৃত্যুতে আমাদের পরিবারে এখন দিশেহারা।’

শাহিনের বাবা আরশেদ মণ্ডল ফোনে বলেন, ‘প্রায় ১০ মাস আগে অনেক কষ্ট করে শাহিনকে লিবিয়াতে পাঠাই। সবকিছু আল্লাহর রহমতে ভালোই চলছিল। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে সব লন্ডভন্ড হয়ে গেছে আমার। লিবিয়ায় আমার ছেলে মারা গেছে। তাকে ওই দেশেই দাফন করা হয়েছে। আমি পরিবার নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি।’

হাবাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন খান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের শাহিন নামে এক যুবক লিবিয়াতে ঘূর্ণিঝড়ে মারা গেছেন। এ খবরে বর্তমানে আমার এলাকা থমথমে হয়ে গেছে।’

যশাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হোসেন খান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের সুজন খাঁ লিবিয়াতে মারা গেছে। এ খবর শোনার পর আমি তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তার অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ জানান, বুধবার রাতে তারা বিষয়টি জানার পর মৃতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চালান। রাত ১০টার দিকে মৃত দুই জনের পরিচয় নিশ্চিত হন তারা।