আসানসোল পুরসভায় তৃণমূল নেতা তথা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দলের কাউন্সিলরের

কলকাতা পুরসভার পর এবার আসানসোল পুর নিগমের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কমিটির টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠল। এই কমিটির কয়েক লক্ষ টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে পুর নিগমের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক তথা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সৈয়দ আলম কাদরির বিরুদ্ধে। তিনি একজন তৃণমূল নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলেরই এক কাউন্সিলর। নিয়ম না মেনে তিনি কয়েক লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূল কাউন্সিলর সিকে রেশমা। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই আসানসোলের রাজনীতিতে শোরগোল পরে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: নিয়োগে দুর্নীতি, ED-র নজরে টাকি-সহ একাধিক পুরসভা

জানা গিয়েছে, তৃণমূল কাউন্সিলর ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি আসানসোল উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ব্যাঙ্কের পাশ বই এবং চেক বই কাদরির কাছেই ছিল। তিনি বিভিন্ন কাজের স্বার্থে চেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার অঙ্ক লিখে আনতেন। সেই মতো চেকে সই করে দিতেন কাউন্সিলর। অভিযোগ, সই করার পরে চেকে আরও একটি সংখ্যা আগে বসিয়ে দিতেন কাদরি। এভাবেই তিনি কয়েক লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ সভাপতির। রেশমার আরও দাবি, ২০১৮ সাল থেকে ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক রয়েছেন কাদরি। ফলে সেক্ষেত্রে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। সে বিষয়টি পুলিশের তদন্ত করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর। 

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাদরি। তিনি জানান, কাউন্সিলর তাঁর বিরুদ্ধে থানা এবং স্কুল পরিদর্শকের লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। এই ঘটনায় আগামীকাল তিনি স্কুল পরিদর্শকের কাছে গিয়ে সমস্ত তথ্য দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, কোনওভাবে এই ধরনের কাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত কি না তা তদন্ত হলেই জানা যাবে। এ বিষয়ে প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক জানান তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন। তার ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষককে নথি সহ দেখা করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যদিও কাদরির বিরুদ্ধে যে এরকম অভিযোগ উঠতে পারে তা মেনে নিতে পারছে না ব্লক নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, কাদরি দলের একজন সক্রিয় সদস্য। তবে তাঁর বিরুদ্ধে যেহেতু অভিযোগ উঠেছে সে ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। এ বিষয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। কংগ্রেসের বক্তব্য, তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তৃণমূলের রাজত্বে এসব সমস্ত জায়গাতেই ঘটে। তবে পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয় সেটাই দেখার। তবে সে ক্ষেত্রে রফা হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা কংগ্রেসের। অন্যদিকে, বিজেপিও এই নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, তৃণমূল এখন আর কাটমানি নেয়না, এখন তৃণমূল লুটমানি শুরু করেছে।