দুর্ঘটনায় আহতদের সাহায্য করা ব্যক্তির হেনস্থা রুখতে উদ্যোগী হল স্বাস্থ্য দফতর

রাস্তায় পড়ে থাকা আহত বা দুর্গতকে উদ্ধার করে অনেকেই হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু, সেই ক্ষেত্রে ওই সমস্ত পরোপকারী ব্যক্তিদের মাঝেমধ্যেই পুলিশি হয়রানির মুখে পড়তে হয়। অথচ, এই সমস্ত ব্যক্তিদের কোনওভাবেই হয়রানি করা যাবে না তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে। অথচ তা মানা হচ্ছে না। সেই নির্দেশিকা যেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়, তার জন্য পদক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি জাতীয় এবং রাজ্য সড়কে এর জন্য ডিসপ্লে লাগানো হবে। এই মর্মে রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মালগাড়ি খালি করার সময় আচমকা উলটে গেল বগি, চাপা পড়ে আহত ৬ শ্রমিক

২০১৫ সালে এটি মামলায় এই সমস্ত পরোপকারী ব্যক্তিদের ‘গুড সামারিটান’ অ্যাখ্যা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, এই সমস্ত ব্যক্তিদের কোনওভাবেই আইনি জটিলতায় ফেলে হয়রানি করা যাবে না। বরঞ্চ তাঁদের কাজের প্রশংসা করতে হবে। কিন্তু তারপরেও সেই নির্দেশ পালন করা হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় এই সমস্ত পরোপকারী ব্যক্তিদের পুলিশি হয়রানি বা হাসপাতালের হয়রানির শিকার হতে হয়। যার ফলে প্রশাসনিক ঝামেলার ভয় অনেকেই এই কাজ থেকে পিছপা হচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ যাতে অক্ষরে অক্ষরে মানা হয়, তার জন্য ১০ মে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য সরকার। আর এনিয়ে ফের একবার পদক্ষেপ করল রাজ্য। এবার ডিসপ্লে বোর্ড লাগানো হবে। এর ফলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এই আদেশনামা জারি করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, পরোপকারী ব্যক্তিদের কোনওভাবে হয়রানি করা যাবে না। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবেই তাদের আইনি সুরক্ষা দিতে হবে। শুধু তাই নয়, ওই সমস্ত পরোপকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হবে বা তারা কই ধরনের আচরণ কাম্য করেন সেই বিষয়টিও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারের জারি করা আদেশনামায় বলা হয়েছে, জখম বা আহত ব্যক্তিকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেই সমস্ত ব্যক্তির নাম, ফোন, নম্বর বা ঠিকানা নেওয়ার জন্য জোর করা যাবে না। তাঁদেরকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ফেলা যাবে না। শুধু তাই নয়, রাস্তায় যদি গুরুতর আহত কোনই ব্যক্তি পড়ে থাকে এবং তাঁর বিষয়ে যদি কোনও ব্যক্তি পুলিশকে খবর দেন তাহলে সেই ব্যক্তির পরিচয়ও জানার জন্য জোর করতে পারবে না পুলিশ। এর পাশাপাশি হাসপাতালগুলি কেউ সতর্ক করেছে রাজ্য সরকার। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি আহত কাউকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেই ব্যক্তির কাছ থেকে কোনওভাবেই টাকা আদায় করতে পারবে না বেসরকারি হাসপাতাল। এই সমস্ত নির্দেশগুলি মেনে চলতে বলা হয়েছে।