বাংলা বানানে অষ্টরম্ভা, চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগের দাবি খারিজ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

বাংলা বানানে অষ্টরম্ভা, এমন এক চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগের দাবি খারিজ করে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবাব বিকেলে চাকরিপ্রার্থীর বানানের বহর দেখে বিচারপতি তাঁকে প্রশ্ন করেন, বিদ্যের এই বহর নিয়ে বাচ্চাদের পড়াতে যাবেন? জবাব ছিল না ওই মহিলা চাকরিপ্রার্থীর কাছে।

২০১৪ সালে টেটে অবতীর্ণ ওই চাকরিপ্রার্থীর দাবি ছিল, তাঁকেও ভুল প্রশ্নের জন্য ৬ নম্বর দিতে হবে। বিচারপতি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ওই চাকরিপ্রার্থীকে অতিরিক্ত নম্বর দিতে নির্দেশ দেন। এর পর চাকরিপ্রার্থী দাবি করেন, তিনি চাকরি পাওয়ার যোগ্য। গত ১৭ জুলাই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই প্রার্থীর ফের ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিতে নির্দেশ দেন। সঙ্গে নির্দেশ দেন, সমস্ত প্রক্রিয়া ভিডিয়োগ্রাফি করে আদালতে জমা দিতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে ফের সেই মামলাটি আদালতে ওঠে। বিচারপতিকে পর্ষদের আইনজীবী বলেন, ওই মহিলা চাকরি পাওয়ার যোগ্য নন। তখন ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্টের ভিডিয়োগ্রাফি দেখতে চান বিচারপতি। তাতে তিনি দেখতে পান, অ্যাপটিটিউড টেস্টে প্রার্থীকে লিখতে বলা হয়েছে ‘আমরা চাষ করি আনন্দে।’ আর প্রার্থী ‘করি’ বানান লিখছেন ‘করী’। এই দেখে বিচারপতি আদালতেই চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ নেন। বলেন, আপনি ‘করি’ বানান ভুল লিখছেন? বলুন তো ‘দুর্গা’ বানান কী? চাকরিপ্রার্থী বানান করে বলেন, ‘দ-য় দীর্ঘ উ গ-য় রেফ আ-কার।’ 

বিচারপতি বলেন, ‘দুর্গা’ বানান ‘দ-য় হ্রস্য উ’ এর পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি প্রার্থীকে বলেন, ‘করি’ বানান কেউ ভুল লেখে? চাকরিপ্রার্থী বলেন, অনেকদিন আগে পড়েছি ভুলে গেছিলাম, খুব নার্ভাস ছিলাম। বিচারপতি বলেন, আমি তো আপনার থেকেও আগে পড়েছি। মনে রইল কী করে? এই বিদ্যে নিয়ে আপনি বাচ্চাদের পড়াবেন? তা হবে না। আপনার থেকেও অযোগ্য কেউ হয়তো টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। তাই বলে আপনাকে স্কুলে পাঠানো যায় না।

বিচারপতির মন্তব্য শুনে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন পর্ষদের আইনজীবী।