সরকারি স্কুলে ঘাটতি শ্রেণিকক্ষের, সব জেলা মিলিয়ে প্রয়োজন বিপুল, সংকট চরমে

করোনাভাইরাসের সময় স্কুল–পড়ুয়ার সংখ্যা কমে গিয়েছিল। তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। এবার অন্যরকম খবর সামনে এল সরকারি নথির মাধ্যমে। পড়ুয়াদের চাপ এখন বেড়েছে। এখন রাজ্যের সব জেলা মিলিয়ে স্কুলে ৫০,৬১১টি অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে রাজ্যের শিক্ষানীতিতে। সুতরাং পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়লেও শ্রেণিকক্ষের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই এই সমস্যা নিরসন করতে প্রত্যেক স্কুলে আরও শ্রেণিকক্ষ তৈরিতে উদ্যোগ নিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। তবে কেন্দ্রের থেকে সর্বশিক্ষা অভিযানে উপযুক্ত টাকা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে বঞ্চিত হচ্ছে পড়ুয়ারা।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ এদিকে সম্প্রতি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের শিক্ষানীতি প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য শিক্ষানীতি তৈরি কমিটির শীর্ষে ছিলেন অধ্যাপক অভীক মজুমদার। তিনি নিজেও অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন অনুভব করেন। অভীকবাবুর কথায়, ‘আগে এত পরিষ্কার করে কোনও হিসেব প্রকাশিত হয়নি। অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন তখনই হয় যখন বিপুল ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করতে সরকারি বিদ্যালয়কে বেছে নেয়। আমরা আশা করছি, প্রয়োজন মেটাতে রাজ্য সরকার কার্যকরি কমিটি গড়ে তুলবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’

ঠিক কী বলছে সরকারি নথি?‌ সরকারি নথি এবং তথ্য বলছে, কলকাতায় সব থেকে কম শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। কারণ সেখানে ঘাটতি মাত্র ৪৫১টি শ্রেণিকক্ষের। তাছাড়া শহরে সরকারি স্কুলে পড়ার প্রবণতা কম। তাই ঘাটতিও কম। সেখানে সব থেকে বেশি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন মুর্শিদাবাদ জেলায়। এই জেলায় সাত হাজারের বেশি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। প্রধানশিক্ষকদের সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের চন্দন মাইতির কথায়, ‘এখন চাহিদা ৫০ হাজারের বেশি। কিছু ব্লকে একটি করে জনপ্রিয় স্কুলে কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ তৈরিতে টাকা দেওয়ার কথা হয়েছে। এটা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম।’

আরও পড়ুন:‌ কলকাতা পুরসভায় তুমুল মারামারি, সজল ঘোষ–অসীম বসুকে শোকজ মালা রায়ের

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ যে সব স্কুলে প্রচুর সংখ্যক পড়ুয়া, সেখানে পৃথক শ্রেণিকক্ষ পাওয়া যাচ্ছে না। গড়িয়া হরিমতি দেবী উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পিয়ালী গোস্বামী জানান, তাঁদের স্কুলে প্রায় ১৫০০ ছাত্রী আছে। যে দিন সব ছাত্রী উপস্থিত থাকে তখন একটি বেঞ্চে ৫–৬ জনকে একসঙ্গে বসতে হয়। প্রধানশিক্ষিকার কথায়, ‘এখনই আমাদের একটি হল ঘর ও দু’টি শ্রেণিকক্ষ দরকার।’‌ হরিনাভি ডিভিএএস হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ২১০০ ছাত্রছাত্রী আছে। প্রধানশিক্ষক বিক্রমজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‌এখন ৮টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। একাদশ–দ্বাদশে পৃথক বিষয়ের ক্লাস নেওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি দু’টি ঘরের জন্য ২৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।’