বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেল দশম শ্রেণির তিন বান্ধবী, রাজমিস্ত্রির সঙ্গে প্রেম, তারপর?

অনেকটা রাজা হিন্দুস্তানি সিনেমার গল্পের মতো ঘটনা। তবে এখানে ট্যাক্সিচালকের পরিবর্তে রাজমিস্ত্রির সঙ্গে প্রেম ঘটল দশম শ্রেণির ছাত্রীর। আর এখানে সংখ্যাটা এক জোড়া নয়। তিন রাজমিস্ত্রির প্রেমে পড়ে একসঙ্গে তিনজন দশম শ্রেণির ছাত্রীরা বাড়ি ছাড়ল। তবে সেই প্রেম করে পালিয়ে বাঁচা গেল না। পুলিশের কাছে তিনজনের পরিবার অভিযোগ দায়ের করেন। আর তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে ১২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের উদ্ধার করল পুলিশ। একইসঙ্গে ফুঁসলিয়ে তিন নাবালিকাকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে দুই রাজমিস্ত্রিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর একজন চম্পট দিয়েছে। অভিযুক্তরা তিন নাবালিকাকে নিয়ে হাওড়া থেকে মুম্বই পালানোর ছক কষেছিল। তদন্তে নেমে এটাই জানতে পেরেছে পুলিশ।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর বাজার থেকে তিন বান্ধবী নিখোঁজ হয়ে যায়। বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা নানা জায়গায় খোঁজ করতে শুরু করেন। কিন্তু কোনও সন্ধান না মেলায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তখনই জানা যায়, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই তিন বান্ধবীকে নিয়ে হাওয়া হয়েছে তিন যুবক। তিন নাবালিকার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গ্রামে আলোড়ন পড়ে যায়। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা গ্রামে পাকা বাড়ি তৈরি করতে আসা রাজমিস্ত্রিদের ঠিকানায় হাজির হন। আর তথ্য পান এখানের তিন রাজমিস্ত্রিও বাড়ি থেকে উধাও। তখন দুয়ে দুয়ে চার করে ফেলেন সকলে।

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ এখানে কাজ করতে এসেছিলেন ১১ জন রাজমিস্ত্রি। কিন্তু তাঁদের মধ্যে তিনজন নিখোঁজ হয়ে যায়। বাকি আটজন রাজমিস্ত্রিকে স্থানীয় ক্লাবঘরে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। গোপীবল্লভপুর থানার পুলিশ অপহরণের মামলা দায়ের করে। রাজমিস্ত্রিদের ফোন বন্ধ থাকায় তাদের লোকেশন ট্র‌্যাক করা যাচ্ছিল না। একজন কোনও কারণে ফোন খুললে পুলিশ টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে সবটা ধরে ফেলে। তারপর অকুস্থলে হানা দিয়েই তিনকন্যাকে উদ্ধার করে। আর দু’জন রাজমিস্ত্রিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম শেখ নাজিমুদ্দিন ও শেখ শরিফুল। এরা বিবাহিত। পলাতক শেখ আরিফুল অবিবাহিত। স্কুল থেকেই তিন বান্ধবী বাড়ি থেকে পালানোর ছক কষে।

আরও পড়ুন:‌ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে টাকা মেলেনি, রোগী আটকে রাখায় মৃত্যুর অভিযোগে তোলপাড়

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ তবে এরা সেদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে আসে। তারপর প্রেমের টানে একসঙ্গে বাড়ি থেকে বিকেলে বেরিয়ে যায়। রাজমিস্ত্রিদের সঙ্গে বাজারে গিয়ে যোগাযোগ করে। সেখান থেকে সকলে চম্পট দেয়। পুলিশ সূত্রে খবর, তিন বান্ধবীর বাড়ি গোপীবল্লভপুর থানা এলাকায়। তিনজনেই দশম শ্রেণিতে পড়ে। তিনজনেই অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু। বাড়ি থেকে রোজ তিন বান্ধবী একসঙ্গে হেঁটে স্কুলে যেত। ওই এলাকায় পাকা বাড়ি তৈরি করতে হাওড়া ও সংলগ্ন এলাকা থেকে ১১ জন রাজমিস্ত্রি একটি ঘর ভাড়া নেয়। স্কুল থেকে বাড়ি যাতায়াতের পথে তিন বান্ধবীর সঙ্গে পরিচয় হয় তিন রাজমিস্ত্রি যুবকের। তারপরই প্রেমের টানে গৃহত্যাগ।