চাষ না করেই এসেছে বিদ্যুতের বিল, দুয়ারে সরকারে মুকুব ২৪ লাখ টাকা

বন্যার কারণে প্রায় ২০ বছর ধরে জমিতে বন্ধ ছিল চাষবাস। কিন্তু, বিদ্যুতের লাইন না কাটার ফলে প্রতিমাসে ন্যূনতম বিল অব্যহত ছিল। সেই সঙ্গে ছিল সুদ। সবমিলিয়ে বিদ্যুতের বিল দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। দুয়ারে সরকারে তার মধ্যে ২৪ লক্ষ টাকার বিল মুকুব করল রাজ্য সরকার। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের। বাকি ৬ লক্ষ টাকার বিল পরিশোধ করে স্বস্তি পেলেন কেতুগ্রাম ১ ব্লকের পালিটা পঞ্চায়েতের ৯০ চাষি। সরকারের নির্দেশমতোই ওই চাষিদের বিল মুকুব করা হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: আপনারও কি বিদ্যুতের বিল বেশি এসেছে ? কী কারণ জেনে নিন

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেতুগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের পালিটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাণ্ডারগড়িয়া, কুলাই, গণকুল, বাকলসা প্রভৃতি গ্রামের মাঠে ২৫০টি জমিতে সাব মার্সিবলের সাহায্যে সেচের ব্যবস্থা করে চাষ করা হত। প্রায় ৯০ জন চাষি ওই সাব মার্সিবলের জল ব্যবহার করতেন। মাসের শেষে তাঁরা একযোগে বিদ্যুতের বিল মেটাতেন। এর জন্য চাঁদা তুলে চাষিরা বিদ্যুতের বিল নিয়মিত মেটাতেন। জল সেচের জন্য ওই সাব মার্সিবল বসানো হয়েছিল ৪০ বছর আগে। কিন্তু, সমস্যা দেখা দেয় ২০ বছর আগে। সেই সময় অজয় নদের বন্যার জেরে বিঘার পর বিঘা জমিতে নদীর পলি জমে চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে ওঠে।  তারপর থেকে ওই জমিতে চাষবাস একেবারে বন্ধ থাকে। 

কিন্তু, চাষ বন্ধ থাকলেও সাব মার্সিবলের বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। যার ফলে মাসের পর মাস ন্যূনতম বিল আসতে থাক এবং জমতে থাকে। শেষে বিদ্যুতের বিল ১১ লক্ষ টাকা হয়ে দাঁড়ায়। তার ওপর সুদ সহ বিলের পরিমাণ হয়ে দাঁড়ায় ৩০ লক্ষ টাকা। এত টাকা বিলের বোঝা দেখেই কার্যত মাথায় হাত পড়ে গিয়েছিল চাষিদের। তাঁরা কীভাবে এত পরিমাণ বিল মেটাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। শেষে রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকারের শিবিরে সেই সমস্যার সমাধান হয়। বকেয়া ২৯ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৮ টাকা বিলের মধ্যে ২৪ লক্ষ টাকার বিল মুকুব করে সরকার। ফলে চাষিদের দিতে হয়েছে মাত্র ৫ লক্ষ ৮৭ হাজার ২২২ টাকা বিল। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২ বছর আগে ওই এলাকার জমি চাষাবাদের যোগ্য হয়েছে কিন্তু বকেয়া বিল না মেটানোর ফলে তাঁরা জমিতে সেচের জল পাচ্ছিলেন না। তবে দুয়ারে সরকারে অবশেষে তাঁদের সমস্যার সমাধান হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, সরকারের নির্দেশ ছিল। সেই কারণে দুয়ারে সরকারে এই বিপুল পরিমাণ বিল মুকুব করা হয়েছে।