Tea auction method: প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে নয়া নিলাম পদ্ধতিতে কমছে চায়ের দাম, বদলের দাবি

দেশের নাম ইন্ডিয়া নাকি ভারত, এই বিতর্কের মাঝেই এবার এদেশের চা বাগান মালিকরা দাবি করলেন ‘ভারত অকশন’ নাম দেওয়ার পর কমে যাচ্ছে চায়ের দর। হ্যাঁ, কোনও কৌতুক নয়, বাস্তবেই চা বাগান পরিচালকদের ছ’টি সংগঠন মিলিতভাবে কনসাল্টেটিভ কমিটি অফ প্লান্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর পক্ষ থেকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর একটি চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, নতুন ব্যবস্থা অর্থাৎ, ভারত অকশন চালু হওয়ার পর চায়ের দরের পতন ঘটেছে। তাই ভারত অকশন নয়, তাদের দাবি ফিরিয়ে দেওয়া হোক ইংলিশ ব্যবস্থাই।

এই নতুন ব্যবস্থায় নিলামের ক্ষেত্রে গড়ে চায়ের দাম কেজি প্রতি ২০ টাকা অবধি কমে যাচ্ছে বলে চা বাগান পরিচালক সংগঠনগুলির অভিমত। চলতি বছরের মার্চ থেকে পুরনো ব্যবস্থা তুলে চা নিলামের ক্ষেত্রে ভারত অকশন ব্যবস্থা চালু করেছিল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ টি বোর্ড। কিন্তু চা পরিচালনকারী সংগঠনগুলির বিচারে লেটার মার্কস পাওয়া হল না ভারত অকশনের, এমনকি দাবি উঠেছে নতুন এই ব্যবস্থার বদলে ফেরানো হোক পুরনো ‘ইংলিশ ব্যবস্থা’। কিন্তু কেন চায়ের দাম কমে যাচ্ছে নতুন নিলাম ব্যবস্থায়।

‘ভারত অকশন’ পদ্ধতিতে একটি নিলামে দীর্ঘক্ষণ দর কষাকষি চলে না। কম্পিউটারের মাধ্যমে একটি টেন্ডারের দরপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে যিনি সর্বোচ্চ দাম হাঁকেন, তাকেই বিক্রি করা হয় সেই চায়ের টেন্ডার। এই পদ্ধতিতে অন্ততপক্ষে ৩০ ব্যাগ চা তাকে কিনতে হয়। আগের ব্যবস্থায় চায়ের নমুনা দেখিয়ে সর্বোচ্চ দর না পাওয়া পর্যন্ত প্রচলিত নিয়মে চলত দরকষাকষি। এর পাশাপাশি ন্যূনতম ২০ ব্যাগ চা কিনলেই চলত একজন ব্যবসায়ীর। এর ফলে মাঝারি থেকে ছোট ক্রেতারাও অংশগ্রহণ করতে পারত নিলামে। কিন্তু, নতুন নিলাম ব্যবস্থায় সামর্থের অভাবে সকল ক্রেতারা অংশগ্রহণ না করায় বাজারের নিয়মে কমছে চায়ের দাম। এর আগে যে পদ্ধতিতে চা নিলাম হত, তাকে ‘ইংলিশ ব্যবস্থা’ বলা হত। ভারত অকশনের বদলে কলোনিয়াল হ্যাংওভারেই ভরসা রাখছেন চা বাগান পরিচালন সংগঠনগুলি৷

টি বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘এটি একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত, যা বাণিজ্যমন্ত্রক থেকে নেওয়া হয়েছিল। চা বাগান পরিচালকদের দাবি সেখানেই জানানো হয়েছে।’ সিসিপিএ- এর চেয়ারম্যান অতুল আস্থানা চিঠিতে জানিয়েছেন, ‘ভারত অকশন পদ্ধতি চালু হওয়ার পর থেকেই চায়ের দাম লাফিয়ে কমেছে। তার ফলে শিল্পে টাকার জোগানও কমেছে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের আর্জি পুরনো ইংলিশ ব্যবস্থাই চালু রাখা হোক।’ প্রসঙ্গত পশ্চিমবাংলার শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে গত কয়েকটি নিলামের ক্ষেত্রে চায়ের দাম লাফিয়ে কমেছে। নিলাম কেন্দ্রের পক্ষ থেকে মহেশ বনশল বলেন, ‘নতুন নিলাম ব্যবস্থার পরিবর্তে পুরনো নিলাম ব্যবস্থা ফিরে আসুক, সে দাবি আমাদেরও।’ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে চা পর্ষদের সদস্য মিস্টার বক্সিগুপ্ত জানিয়েছেন, ‘ভারত অকশনে সমস্যা হচ্ছে, পর্ষদের বৈঠকে আমরাও জানাবো এ বিষয়ে।’ এখন দেখার ‘ভারত অকশন’-এর বদলে ইংলিশ ব্যবস্থায় ফিরে আসে নাকি, নতুন কোনও নামের মোড়কে পুরনো ব্যবস্থাই আবার চালু হয়।