প্রজ্ঞাদীপার মৃত্যুতে নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ

চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল নিম্ন আদালত, অথচ কলকাতা হাইকোর্টে অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে সিআইডি। কিন্তু, নিম্ন আদালতকে সে কথা তারা জানায়নি। সিআইডির এমন ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট। এর পরেই নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করে দিয়ে সিআইডিকে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার জন্য সময় দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন: শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন, প্রজ্ঞাদীপার মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার সেনা চিকিৎসক

মৃতার পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে পুলিশের কাছ থেকে এই মামলার তদন্ত সিআইডিকে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সিআইডি চাইছে এই মামলায় অতিরিক্ত চার্জ গঠন করতে। কিন্তু, সে কথা তারা নিম্ন আদালতকে জানায়নি। ফলে নিম্ন আদালতে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এই মামলায় হাইকোর্টের কাছে সিআইডি সময় চাইলে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘এটা কি ছেলে খেলা? একদিকে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার জন্য সময় চাওয়া হচ্ছে অন্যদিকে নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন চলছে।’ এরপরে নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।

নিয়ম অনুযায়ী, তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে এখনও যেহেতু তদন্ত শেষ হয়নি তাই চার্জ গঠন উচিত নয় বলে জানান মৃতার পরিবারের আইনজীবী। আগামী ১৭ই অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। উল্লেখ্য, মাস খানেক আগে প্রজ্ঞাদীপা হালদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল বারাকপুর সেনা ছাউনির অফিসার্স কোয়ার্টার্স ম্যান্ডেলা হাউসের ২০ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে। ওই ঘর থেকেই একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়। সুইসাইড নোটে তিনি তাঁর লিভ ইন সঙ্গী তথা সেনাবাহিনীর এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। অভিযুক্ত সেনাবাহিনীর চিকিৎসক লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার। তাঁকে পরে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আগে এই মামলার শুনানিতে প্রজ্ঞাদীপার দেহে পাওয়া একাধিক আঘাতের চিহ্ন নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন বিচারপতি। সেই ক্ষতচিহ্ন কীভাবে এল? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘যদি গলায় ফাঁস দিয়ে ঝোলার কারণে যদি মৃত্যু হয় তাহলে দেহে ক্ষতচিহ্ন কেন থাকবে? একই সঙ্গে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক কেন এ ব্যাপারে দিক নির্দেশ করেননি?’ তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি। তাছাড়া, ঘটনার ভিডিয়োগ্রাফি না করা নিয়েও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশ। পরে সিআইডির হাতে তদন্তভার তুলে দেয় হাইকোর্ট।